[ad_1]
ছোটবেলা থেকেই আমাদের শেখানো হয়ে থাকে, ভালো করে পড়াশোনা করলে ভালো চাকরি পাওয়া যায়।
বাংলা থেকে শুরু করে ভারতের প্রত্যেকটি ছেলে মেয়ে নিজের অভিভাবকদের মুখে এই কথা শুনে শুনে বড় হয়েছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতার ঝুলিতে একের পর এক ডিগ্রী ঢুকে ক্রমাগত ভার বাড়তে শুরু করেছে যখন, সেই একই সময়ে হঠাৎ করে চলে এলো করোনা ভাইরাস প্যানডেমিক।
পুরো বিশ্ব যেন একেবারে থমকে গেল। কোন জায়গাতে কোন কাজ নেই, পুরো বিশ্ব একেবারে থমকে গেছে এবং প্রচুর মানুষ একাজ হারাচ্ছেন।
হঠাৎ করেই যখন চাকরি বাকরি করার সময় আসলো তখন দুম করে যেন ছন্দপতন। এত পড়াশোনা করার পরেও চাকরি মিলল না।
এই দুর্মূল্যের বাজারে চাকরি পাওয়া রীতিমতো দুঃসাধ্য। তাই এই যুগে সব থেকে বেশি শুরু হয়েছে যেটা সেটা হল স্টার্টআপ বিজনেস।
আসলে পাতি বাংলায় এটাকে ব্যবসাই বলে, তবে এই জিনিসটির একটি পোশাকি নাম রয়েছে, যেটা হলো স্টার্টআপ। আজকের দিনের মর্ডান জমানায় আর কেউ ব্যবসা কথাটা উচ্চারণ করতে চায়না।বরং সবাই একটা একটা নতুন স্টার্টআপ খুলে সেখানকার মালিক হয়ে বসে। এই লকডাউন এর বাজারে যখন ভারতের আর্থসামাজিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্গীণ, সেই সময় দাঁড়িয়ে এই ধরনের ব্যবসা অনেকের কাছে দু’বেলা দু’মুঠো অন্নের যোগান দিচ্ছে। তাই যে কাজের সুযোগ পাবেন না কেন সেই কাজ করতে এগিয়ে যাবেন।
কোনদিন ভয় পাবেন না, ঠিক সেরকমই করেছেন একজন উচ্চ শিক্ষিত বেকার টুকটুকি দাস। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পরেও তিনি দিয়েছেন একটি চায়ের দোকান। আর শখ করে নিজের চায়ের দোকানের নাম রেখেছেন নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেই। কোথাও দাম না পেলে নিজেকে ঠিক এভাবেই নতুন করে মেলে ধরুন। ২৬ বছর বয়সি হাওড়া স্টেশন এলাকার বাসিন্দা টুকটুকি দাস এরকমই অসাধ্য সাধন করে দেখিয়েছেন। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাবজেক্টে মাস্টার্স করার পরেও তারপরও চাকরি জুট ছিলনা। তার ছোট থেকে বড় হওয়া টা পুরোপুরি অভাবকে সঙ্গী করেই হয়েছে। বাবার একটা মুদির দোকান ছিল। তাই সংসার সামলাতে মাঝেমধ্যে থেকে ভ্যান রিক্সা টানতে হয়েছিল। সেই সময় তার মা দোকান চালাতেণ।
এভাবেই তার মেয়েকে বড় করে তোলা। রবীন্দ্রভারতী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স এর মত একটি ডিগ্রী তিনি অর্জন করে নিয়েছেন। ৬১ শতাংশ নম্বর নিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পরে আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতো তিনিও ভেবেছিলেন তিনি চাকরি করবেন। কিন্তু, এই দুর্মূল্যের বাজারে চাকরি কোথায়! বারবার চাকরির পরীক্ষায় বসেও যখন চাকরি মিলল না, তখন তার মাথায় একটা নতুন আইডিয়া খেলে গেল। তার মাথায় এলো সে একটি চায়ের দোকান খুলতে পারে। অবশ্য এই আইডিয়া অনেকদিন আগে থেকেই তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখে আসছেন। আপনারা যারা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন তারা সকলেই হয়তো এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন এই মেয়েটির আসল ইনস্পিরেশন কে। হ্যাঁ তিনি হলেন মুম্বাইয়ের আরেকজন স্টার্টআপ ব্যবসায়ী যিনি হলেন একজন উচ্চ শিক্ষিত বেকার। তার চায়ের দোকানে তিনি নাম রেখেছেন এমবিএ চা ওয়ালা।
সেই নামের থেকে ইনস্পিরেশন নিয়ে টুকটুকি হাওড়া স্টেশন এলাকায় খুলে ফেললেন নিজের নতুন চায়ের দোকান এম ইংলিশ চায়ওয়ালি। চিরাচরিত লিঙ্গবৈষম্য থাকলেও, নিজের জেদের কাছে হার না মেনে হাওড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে তিনি এই চায়ের দোকান খুলেন। তিনি বলেছেন, “আমার মতে কোন কাজ কিন্তু ছোট নয়। এখানে ৪ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫ টাকা পর্যন্ত চা পাওয়া যায়। এলাচ চা থেকে শুরু করে মশলা চা, কেশর চা এমনকি চকলেট চা আপনারা পেয়ে যাবেন এমএ ইংলিশ চায়ওয়ালির চায়ের দোকানে। তার সঙ্গে থাকবে গরম গরম সিঙ্গারা। চায়ের দোকান খুললে ও টুকটুকি অত্যন্ত খুশি তার চায়ের দোকান নিয়ে। সে সবসময় জানাচ্ছে, তার একটি নিজের ব্র্যান্ড তৈরি করার ইচ্ছা রয়েছে। ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়াতে তার এই চায়ের দোকান রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকের কাছেই তার এই উদ্যোগ সাধুবাদ এর যোগ্য হয়ে উঠেছে।
[ad_2]