[ad_1]
মানুষ যেন ট্রেন্ডিং-এর জোয়ারে ভাসছে। আশেপাশে যাইই দেখিনা কেন, সবটাই এখন ট্রেন্ডিং। চুন থেকে পান খসলেই যেকোন কিছু হয়ে যায় ভাইরাল।
করোনা মরসুম দেশ থেকে এখনও বিদায় হয়নি। তার আগেই জনকূলের মাথায় আরও একটি ভাইরাসের ছাওনি পড়েছে! তবে ওমিক্রনের প্রভাব এখন দেশে পড়েই গেছে।
প্রবাদ আছে যে কষ্ট করলে তবেই কেষ্ট পাওয়া যায়। আর এই প্রবাদটিকে বাস্তবে প্রমান করে দিয়েছেন শ্রীকান্ত পান্তওয়ানে।
শ্রীকান্ত সবসময় পায়লট হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন কিন্তু তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় শ্রীকান্তর কাছে পাইলটের ট্রেনিং নেওয়ার টাকা ছিল না।
কিন্তু শ্রীকান্ত পরিস্থিতির কাছে হার মানেননি এবং স্বপ্ন দেখা বন্ধ করেননি। তিনি পাইলট হওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন ও সফলতা অর্জন করেছেন। সফলতা অর্জন করে শ্রীকান্ত তার পরিবারের পাশাপাশি দেশের নামও উজ্জ্বল করেছেন। আসুন আজ আমরা এই আর্টিকেলে শ্রীকান্তর সফলতার গল্প সংক্ষেপে জেনেনি। শ্রীকান্ত পান্তাওয়ানে নাগপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করায় ছোটবেলা থেকেই তাকে দরিদ্রতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। শ্রীকান্তের বাবা একজন প্রহরী হিসাবে কাজ করতেন এবং এই কাজের মাধ্যমেই তিনি কোনোরকমে কষ্ট করে সংসারের খরচা ও সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ চালাতেন।
শ্রীকান্ত শৈশব থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন ও বড় হয়ে পাইলট হওয়া স্বপ্ন দেখতেন তিনি। কিন্তু তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা মোটেও ভালো ছিল না। শ্রীকান্ত যখন বড় হলো তখন পরিবারের আর্থিক সীমাবদ্ধতা তাকে চিন্তিত করে তুলেছিল। তাই স্কুলে পড়ার সাথে সাথে তিনি ডেলিভারি বয়ের পার্ট টাইম কাজ করাও শুরু করেছিলেন। এরপর স্কুলে পড়া শেষ হওয়ার পর শ্রীকান্তের কষ্ট আরও বেড়ে যায়। কারণ শ্রীকান্তকে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল যেখানে তাকে পড়াশোনা ও পরিবারের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হয়েছিল। এরপর শ্রীকান্ত পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে পরিবারের জন্য অর্থ উপার্জন করা শুরু করেছিলেন। শ্রীকান্ত বাড়ির আর্থিক অবস্থার উন্নতির জন্য একটি অটো চালানো শুরু করেছিলেন। তবে অটো চালালেও তার মধ্যে পাইলট হওয়ার জেদ ও আবেগর পরিমান একই ছিল।
এমতাবস্থায় একদিন তিনি বিমানবন্দরে মাল ডেলিভারি করতে গিয়ে সেখানে রানওয়েতে প্লেন চলতে দেখে শ্রীকান্ত সিদ্ধান্ত নেয় যে তিনি তার স্বপ্নকে পূরণ করেই ছাড়বেন। এরপর শ্রীকান্তর আলাপ একটি চা স্টলের বিক্রেতার সাথে হয়েছিল। এই বিক্রেতা তাকে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন পাইলট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম সম্পর্কে জানিয়েছিল। তারপর এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামের অধীনে, শ্রীকান্ত মধ্যপ্রদেশে অবস্থিত একটি ফ্লাইট স্কুলে ভর্তি হন আর বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেছিলেন। ট্রেনিংয়ের পাশাপাশি তিনি অর্থ উপার্জনের জন্য একটি কোম্পানিতেও কাজ করতেন। শ্রীকান্ত তার স্বপ্ন পূরণের জন্য দিনরাত এক করে ট্রেনিং নিয়েছিলেন ও কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। তবে ট্রেনিংয়ের সময় ইংরেজি ভাষা না জানায় তাকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল।
কিন্তু শ্রীকান্ত হল ছাড়েননি এবং নিজের দুর্বলতাকে নিজের শক্তিতে রূপান্তরিত করেছিলেন। এরপর শ্রীকান্ত একটি ফ্লাইং পরীক্ষা দেন ও সেটি ক্লিয়ার করতে সফল হয়েছিলেন। এরপর তিনি ইন্ডিগো এয়ারলাইন্স কোম্পানিতে পাইলট হিসাবে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। একটা সময় ছিল যখন সংসারের অভাব মেটাতে তাকে অটো চালাতে হয়েছিল আর আজ শ্রীকান্ত ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চালাচ্ছেন। আজ শ্রীকান্ত পান্তওয়ানে লক্ষ লক্ষ যুবকের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।যারা প্রায়ই পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে থাকে ও কঠোর পরিশ্রম করতে চায় না তাদের শ্রীকান্ত বুঝিয়ে দিয়েছেন যে হাল না ছেড়ে কঠোর পরিশ্রম করলে সফলতা অবশ্যই অর্জন হবে।
[ad_2]