[ad_1]
রাস্তার ধারে কাচ ও কাঠে ঘেরা ছোট্ট একেকটি কক্ষ। দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে মাত্র ফুট চারেক। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে লন্ডন শহরের বুকে ছড়িয়ে থাকা লাল টেলিফোন বুথ নিয়ে। যার নাম ‘কিয়স্ক’। যা ব্রিটেনের ঐতিহ্যবাহী আইকনও বটে। ২০০৬ সালে ব্রিটেনের সেরা দশ স্থাপত্য উদ্ভাবনার মধ্যেও জায়গা করে নিয়েছিল এই লাল টেলিফোন বুথ।
কালের আবহে এখন বিলুপ্তপ্রায় লাল টেলিফোন বুথ। লন্ডনে আর সচল টেলিফোন বুথের অস্তিত্ব না থাকলেও, ব্রিটেনের কিছু প্রান্তিক অঞ্চলে এখনও টিম টিম করে বাতি জ্বলে এসব কিয়স্কে। এবার সেগুলোকেই সংরক্ষণের বিশেষ উদ্যোগ নিলো যুক্তরাজ্যের টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অফকম’।
‘অফকম’-এর এক পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, কমপক্ষে এক হাজার ৪০০টি ফোন বুথ ছড়িয়ে রয়েছে ব্রিটেনের গ্রামীণ অঞ্চলে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলোতে মোবাইল পরিষেবা চালু থাকলেও, টেলি-যোগের মান ততটাও ভালো নয়। এই সব অঞ্চলগুলো থেকেই ‘টেলিফোন বক্স’-খ্যাত এই বুথের সংরক্ষণ কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে অফকম।
এর বাইরেও আরো চার হাজার ফোন বুথকে সংরক্ষণের খাতায় নথিভুক্ত করেছে সংস্থাটি। ব্রিটেনের যেসব অঞ্চলগুলো দুর্ঘটনা বা আত্মহত্যা-প্রবণ এবং যে-সমস্ত অঞ্চলে চাইল্ডলাইনের মতো পরিষেবার চাহিদা বেশি- সেই অঞ্চলগুলোকে চিহ্নিত করে সেখানেও সংরক্ষিত হবে এই লাল টেলিফোন বুথ। ২০২১ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০-র শুরু থেকে মে মাস পর্যন্ত শিশুসুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে ২৫ হাজার বার ব্যবহৃত হয়েছে এই ধরনের টেলিফোন বুথ। দুর্ঘটনা এবং জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে সংখ্যাটা প্রায় দেড় লাখের থেকেও বেশি। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগকারী কিংবা সংবাদপ্রেরক নিজের পরিচয় গোপন করতেই এই ফোন বুথগুলো ব্যবহার করে থাকে, এমনটাই জানাচ্ছে ‘অফকম’।
১৯২৬ সালের কথা। প্রথমবার এই লাল টেলিফোন কিয়স্ক স্থাপিত হয়েছিল লন্ডনে। নেপথ্যে ছিলেন স্থপতি স্যার গিলবার্ট স্কট। পরবর্তীতে দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এই টেলিফোন কিয়স্ক। লন্ডনের রাস্তায় মাত্র কয়েকশো মিটারের মধ্যেই স্থাপন করা হয়েছিল একটি করে কিয়স্ক। তার বহর ছড়িয়ে পড়েছিল প্রান্তিক অঞ্চলেও।
চলতি শতকের শুরু থেকে মোবাইল ফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রমে সংকটের সম্মুখীন হন ঐতিহ্যবাহী টেলিফোন বুথগুলো। গ্রাহক না থাকায় একে একে বন্ধ হয়ে যায় লন্ডনের প্রায় সমস্ত টেলিফোন বক্সই। শুধু বিগত পাঁচ বছরই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে ছয় হাজার এরও বেশি পুরনো ফোন বক্স।
ব্রিটিশ টেলিকম নিয়ন্ত্রক সংস্থার উদ্যোগে এবার সংরক্ষিত হবে বাকি টেলিফোন বুথগুলো। এরই মধ্যে এমন খুশির খবর জানিয়েছে দেশটির একাধিক গণমাধ্যম।
[ad_2]