সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে কলা খান – জানুন কলার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন: সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে কলা খাওয়া খুবই প্রয়োজন। আমাদের দেশে কলা উৎকৃষ্ট ফল। কলা সহজপাচ্য উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাদ্য। কলা ভারতের সমস্ত রাজ্যে পাওয়া যায়। কলা কাঁচা কলা রান্না করে ও পাকা কলার খোসা ছাড়িয়ে খাওয়া হয়ে থাকে।
কলায় যে ভিটামিন ও পুষ্টি আছে সেগুলি হলো বিশেষ উল্লেখযোগ্য যথা পরিমানে থাকে যে সমস্ত পুষ্টি – কার্বোহাইড্রেট, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, প্রােটিন, ভিটামিন এ, ফ্যাট, ভিটামিন বি-২, তাপশক্তি, লােহা, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি। কলা মানুষের নানা ছোট বড়ো রোগ সারাতে সাহায্য করে। কলা খেতে খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টি কর ফল।
সাধারণ নাম: Banana
কলার বিজ্ঞানসম্মত নাম: Musa Paradisiaca
Benefits And Nutritional Value Of Banana – জানুন কলার কলার উপকারিতা
১। পেটের অসুখে:– আমাশয় ও রক্ত আমাশায় কাচকলা সেদ্ধ করে টাটকা টক দইয়ের সঙ্গে মেখে খেলে রােগ সারে।
২। পিত্ত রােগ:- কলা গাছের শুকনাে শেকড় গুঁড়াে করে অল্প পরিমাণে খেলে পিত্ত রােগ সারে। রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া রােগেরও এটি একটি মহৌষধ।
৩। প্রস্রাবের অসুখ:- অনেকের মতে কলা গাছের শেকড়ের রসের সঙ্গে ঘি ও চিনি মিশিয়ে খেলে প্রস্রাবের অসুখ বা মেহ রােগ সারে।
৪। যৌন ব্যাধি:- কাচকলা শুকিয়ে গুঁড়াে করে প্রতিদিন অল্প পরিমাণে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে যৌন ব্যাধি সারে ও প্রস্রাবের অসুখ সারে। এছাড়া পাকা বা কাঁচা কলা নিয়মিত সেবন করলে নানা রকম ছোট বড়ো রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
৫। মেয়েদের প্রদর:- একেবারে কচি কলাপাতা মিহি করে বেটে দুধে মিশিয়ে ঘন ক্ষীরের মতাে। করে খাওয়ালে মেয়েদের প্রদর রােগে উপকার হয়।
আরও পড়ুন: পেঁপের উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
৬। পুষ্টি:– আমাদের দেশে কলা উৎকৃষ্ট ফল। কলা সহজপাচ্য উপাদেয় ও পুষ্টিকর খাদ্য। কলাতে রয়েছে ভিটামিন বি-৬, ভিটামিন-সি, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, ফাইবার, প্রােটিন ও ফ্যাট।
৭। স্ট্রেস কমাতে:– কলাতে রয়েছে অ্যামাইনাে অ্যাসিড ট্রিপটোকান, যা শরীরে সেরাটোনিনে রূপান্তর হয়ে যায়। এই সেরাটোনিন স্ট্রেস কমাতে ও মুড ভালাে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া কলা নিয়মিত সেবন করলে নানা রকম ছোট-বড়ো রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
৮। কোষ্ঠকাঠিন্য:- পেটের সমস্যা সমাধানে কলার জুড়ি মেলা ভার। এতে আছে প্রচুর মাত্রায় ফাইবার, এর ফলে হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয় ও হজম পক্রিয়াকে সচল করে তোলে। পেট ভালাে থাকে, কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর হয়। কলা নিয়মিত সেবন করলে নানা রকম ছোট বড়ো রোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
৯। শর্করা:- কলা নিয়মিত সেবন করলে নানা রকম ছোট-বড়ো রোগের হাতথেকে রেহাই পাওয়া যায়। পেকটিন রেজিসটেন্ট স্টার্চ থাকার ফলে কলা শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
১০। হৃদরাে:- কলা নিয়মিত সেবন করলে নানা রকম ছোট বড়ো রোগের হাতথেকে রেহাই পাওয়া যায়। কোলা হৃদরোগ, ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কলাতে থাকা পটাসিয়াম শরীরে লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক। এর ফলে ব্লাডপ্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। হৃদরােগের বা হার্ট এটাকের সম্ভবনা কমে কমে যায় ।
১১। হিমােগ্লোবিন:– কলাতে থাকা ভিটামিন-বি৬ শরীরে, হিমােগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়ক।এছাড়া কলা নিয়মিত সেবন করলে নানা রকম ছোট-বড়ো রোগের হাতথেকে রেহাই পাওয়া যায়।
১৩। ইনস্ট্যান্ট এনার্জি:- কলা খেলে শরীরে ইনস্ট্যান্ট এনার্জি আসে। খেলোয়াররা তাই নিজেদের এনার্জি ফেরাতে কলা বা কলার জুস পান করে থাকে। এছাড়া কলা নিয়মিত সেবন করলে নানা রকম ছোট-বড়ো রোগের হাতথেকে রেহাই পাওয়া যায়।
১৪। আলসারে:- পেটের পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে কলা। এর ফলে বুক জ্বালা বা আলসারে খুবই উপকারী এই ফল।
১৫। কিডনি:- কলা খেলে কিডনি ভালাে থাকে। এবং পাকস্থলীর সমস্যা দূর হয়।
১৬। চর্মরােগে কলা:- অ্যাকনে বা সােরিয়াসের মত চর্মরােগে কলা উপকারী। দাদ, হাজাতে কলার খোলা থেঁতো করে রস নিয়ে লাগালে উপকার পাবেন।
১৭। কলা খেলে শরীরে ক্র্যাম্প কমে।
সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে কলা খান – জানুন কলার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
খাদ্য উপাদান প্রতি ১০০ গ্রাম কলাতে-
- কার্বোহাইড্রেট – ২২.৮ গ্রাম
- ফসফরাস – ২২.০ মিলিগ্রাম
- প্রােটিন – ১.০৯ গ্রাম
- লােহা – ০.২৬ মিলিগ্রাম
- ফ্যাট – ০.৩৩ গ্রাম
- ভিটামিন-এ – ৬০.৪৮ গ্রাম
- ভিটামিন-বি – ১ ০.০৩১ মিলিগ্রাম
- খাদ্য আঁশ – ২.৬০ গ্রাম
- ভিটামিন বি-২ -০.০৭৩ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম – ৫.০০ মিলিগ্রাম
- তাপশক্তি – ১১৬ কিলাে ক্যালােরি
- পটাসিয়াম – ৩৫৮.০ মিলিগ্রাম