ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার জীবনী – J. Robert Oppenheimer Biography in Bengali

J Robert Oppenheimer Biography in Bengali
J Robert Oppenheimer Biography in Bengali

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার জীবনী: Bengaliportal.com আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে J. Robert Oppenheimer Biography in Bengali. আপনারা যারা জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার এর জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার কে ছিলেন? Who is J. Robert Oppenheimer?

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার (২২ এপ্রিল, ১৯০৪ – ১৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৭) আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান সম্পর্কীয় প্রশাসক ছিলেন। লস এলামোজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরিতে পরিচালক হিসেবে কর্মরত অবস্থায় ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে আণবিক বোমার উন্নয়নে কাজ করেছেন।

এছাড়াও তিনি বার্কলে এলাকায় অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিরও পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। কিন্তু নিরাপত্তা বিষয়ক শুনানীতে তার বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের অভিযোগ উত্থাপিত হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের পরামর্শকের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে থেকে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীরা তার স্বপক্ষে অবস্থান নেন। এছাড়াও, রাজনৈতিক এবং নৈতিকতাকে বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্তে সরকারের বিরুদ্ধে নিন্দাজ্ঞাপন করা হয়।

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার জীবনী – J. Robert Oppenheimer Biography in Bengali

নামজুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার
জন্ম22 এপ্রিল 1904
পিতাজুলিয়াস ওপেনহেইমার
মাতাএলা ফ্রাইডম্যান
জন্মস্থাননিউ ইয়র্ক সিটি, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তামার্কিন
পেশাতাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী
মৃত্যু18 ফেব্রুয়ারি, 1967 (বয়সী 62)

bengaliportal

 

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার এর জন্ম: J. Robert Oppenheimer’s Birthday

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার ২২ এপ্রিল, ১৯০৪ জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৪৫ খ্রিঃ ১৬ জুলাই তারিখটি আধুনিক বিজ্ঞান তথা মানব সভ্যতার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন হিসাবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এই দিন সকাল সাড়ে পাঁচটায় নিউমেক্সিকোর এক মরুভূমিতে পৃথিবীর প্রথম আণবিক বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল। আমেরিকার উদ্যোগে সংঘটিত সেই আণবিক প্রকল্পের নেতা ছিলেন জে . রবার্ট ওপেনহাইমার ৷

শত শত বিজ্ঞানী, সামরিক বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তা, কারিগর ও প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে এই আণবিক প্রকল্পটি প্রণয়ন করা হয়েছিল। এই প্রকল্পের সর্বোচ্চ সর্বময় কর্তা হওয়ায় ওপেনহাইমারকে সহজেই আণবিক বোমার জনক নামে অভিহিত করা যায়।

আরও পড়ুন: সান ইয়াৎ-সেন জীবনী

আরও পড়ুন: আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট জীবনী

আরও পড়ুন: আডলফ হিটলার জীবনী

আরও পড়ুন: হো চি মিন জীবনী

আরও পড়ুন: জুলিয়াস সিজার জীবনী

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার এর পিতামাতা ও জন্মস্থান: J. Robert Oppenheimer’s Parents And Birth Place

বিশ্ববিশ্রুত এই বিজ্ঞানীর জন্ম হয়েছিল ১৯০৪ খ্রিঃ ২২ শে এপ্রিল নিউইয়র্কে। ছেলেবেলা থেকেই তাঁর অসাধারণ মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। মাত্র সাতবছর বয়সের মধ্যেই তিনি নানা ভূ – তাত্ত্বিক শিলার নমুনা সংগ্রহ করেন। ওই বয়সেই তিনি নিজের অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবাণু পর্যবেক্ষণের কৌশল আয়ত্ত করেন। এছাড়া অঙ্কন বিদ্যা এবং যন্ত্রসঙ্গীতেও রীতিমত কুশলতার পরিচয় দেন।

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার এর শিক্ষাজীবন: J. Robert Oppenheimer’s Educational Life

বিখ্যাত এথিকাল কালচার স্কুলে ওপেনহাইমারের শিক্ষারম্ভ হয়েছিল। মাত্র বার বছর বয়সেই রসায়নবিদ্যার প্রতি তাঁর অপরিসীম আগ্রহ দেখা দিলে তাঁর পিতা তাঁকে একটি ল্যাবরেটরি তৈরি করে দেন। সেই সঙ্গে বিশেষভাবে রসায়ন শিক্ষা দেবার জন্য একজন শিক্ষক নিযুক্ত করেন।

উপযুক্ত শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে থেকে গভীর অধ্যবসায় নিয়ে তিনি মাত্র ছয় সপ্তাহের মধ্যে এক বছরের নির্দিষ্ট পাঠ শেষ করে সকলকে বিস্মিত করে দেন। এথিকাল কালচার স্কুল থেকে স্নাতক হবার পর ওপেনহাইমার পিতার সঙ্গে গ্রীস, রোম ও ইউরোপের অন্যান্য সংস্কৃতিসম্পন্ন দেশগুলি পরিভ্রমণ করেন।

এই সময়েই তিনি ফরাসী, স্প্যানিশ, ইতালীয়, লাতিন এবং গ্রীক ভাষা আয়ত্ত করেন। উনিশ বছর বয়সে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নশাস্ত্র নিয়ে পড়াশুনা শুরু করেন এবং চার বছরের পাঠক্রম তিন বছরে শেষ করে সর্বোচ্চ স্থান অধিকার করে স্নাতক হন। ১৯২৬ খ্রিঃ ওপেনহাইমার ইংলন্ডে যান।

কেমব্রিজের ক্যাভেণ্ডিশ ল্যাবরেটরিতে বিশ্রুত বিজ্ঞানী রাদারফোর্ডের সঙ্গে তিনি কাজ শুরু করেন। এখানেই বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী ম্যাক্সবর্নের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। বর্ন ওপেনহাইমারকে গটিনজেন নিয়ে যান এবং দুজনে মিলে গবেষণা আরম্ভ করেন। মিলিতভাবে তারা কোয়ান্টাম তত্ত্বের (Quantum Theory) ওপরে যে গবেষণা পত্রটি তৈরি করেন তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ডক্টরেট উপাধি লাভ করেন।

তারপর সুইজারল্যান্ড এবং হল্যান্ডে পড়াশুনা শেষ করে ১৯২৮ খ্রিঃ চব্বিশ বছর বয়সে তিনি আমেরিকায় প্রত্যাবর্তন করেন। ততদিনে পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে ওপেনহাইমারের নাম সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছে। সুইজারল্যাণ্ডে পড়াশুনা করবার সময়েই অণুকে ভেঙ্গে মানবকল্যাণে কিছু করা যায় কিনা এই সম্বন্ধে তার মাথায় উকি দিতে শুরু করেছিল। এ

ই ভাবনা মাথায় নিয়েই তিনি এবারে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। পদার্থবিদ্যায় নতুন কোন আলোকপাত করা যায় কিনা — এবিষয়ে তিনি এই সময়েই গভীর ভাবে চিন্তা ও গবেষণার প্রাথমিক কাজ আরম্ভ করেন। ইতিমধ্যে ১৯৪১ খ্রিঃ ৭ ই ডিসেম্বর জাপান আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র আক্রমণ করসে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গতিপ্রকৃতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। ওই দিন আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা চলাকালীন সময়ে জাপান এক আকস্মিক বিমান আক্রমণে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অন্যতম প্রধান মার্কিন নৌ – ঘাঁটি পার্ল হারবার বিধ্বস্ত করে আমেরিকাকে সরাসরি যুদ্ধে নামতে বাধ্য করে।

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার এর কর্ম জীবন: J. Robert Oppenheimer’s Work Life

১৯৪২ খ্রিঃ সম্পূর্ণ প্রথমার্ধ পর্যন্ত জার্মান – ইতালী – জাপান পক্ষ শক্তি সারা পৃথিবী জুড়ে তাদের বিজয়াভিযান অব্যাহত রাখল। ইতিপূর্বেই আইনস্টাইন এবং অন্যান্য কয়েকজন মার্কিন বিজ্ঞানী মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে এই বলে সতর্ক করে দেন যে জার্মানি এবং ইতালীর বৈজ্ঞানিকরা অপরিমিত ধ্বংসসাধনের ক্ষমতা সম্পন্ন একটি নতুন ধরনের বোমা আবিষ্কারের চেষ্টা করছেন।

এই সতর্কবাণীর পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪২ খ্রিঃ প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট আণবিক বোমা প্রকল্প (Atomic Bomb Project) প্রণয়ন করলেন। বিশ্রুত বিজ্ঞানীরা এই প্রকল্পের সর্বময় কর্তা হিসাবে ওপেনহাইমারের নাম সুপারিশ করেন। সেই অনুযায়ী রুজভেল্ট তাকেই প্রকল্পটির অধিকর্তা হিসাবে নিয়োগ করেন। আমেরিকান আণবিক বোমা প্রকল্প – এর সদর দপ্তর স্থাপিত হল নিউ মেক্সিকোর লস অ্যালামসে।

দেশ বিদেশের বিখ্যাত বিজ্ঞানীরা এখানে সমবেত হলেন ওপেনহাইমারের সহযোগী হিসেবে কাজ করবার জন্য। জার্মানির লিসে মাইনার ও অটো ফ্রিচস, ডেনমার্কের নিয়েলস বোর, ইতালীর এনরিকো ফারমি, হাঙ্গেরির টেলার প্রভৃতি বিশ্বখ্যাত বৈজ্ঞানিকরা আণবিক বোমা নির্মাণ প্রকল্পে যোগ দিয়েছিলেন। প্রকৃত নেতার মতই অত্যন্ত নিষ্ঠাভরে ওপেনহাইমার প্রকল্পটি পরিচালনা করেন।

দিনে – রাতে তিনি চার ঘণ্টার বেশি ঘুমোতেন না। ফলে তাঁর দৈহিক ওজন মারাত্মকভাবে কমে গিয়ে ১৩০ পাউন্ডেরও কম হয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও তার নিষ্ঠা ও ঐকান্তিকতা অটুট ছিল। এই প্রকল্পের যাবতীয় গবেষণার কাজ শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে সম্পন্ন হয়। টেনেসির ওক রিজ – এ ৭৫,০০০ শ্রমিকের চেষ্টায় প্রায় সাড়ে ছয় পাউন্ড মূল্যবান ইউরেনিয়াম -২৩৫ তৈরি করা সম্ভব হয়।

আরও পড়ুন: সুনির্মল বসু জীবনী

আরও পড়ুন: শিবরাম চক্রবর্তী জীবনী

আরও পড়ুন: আশাপূর্ণা দেবী জীবনী

আরও পড়ুন: সুকুমার সেন জীবনী

আরও পড়ুন: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী

এরপর প্লুটোনিয়ামের ফিসন ক্ষমতা (Fission power) আবিষ্কৃত হলে ওয়াশিংটনের হ্যাজফোর্ডে আর একটি প্ল্যান্ট তৈরি করে সেখানে আরও ৭৫ হাজার লোককে নিযুক্ত করা হল। এভাবে দীর্ঘ তিন বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের পর ১৯৪৫ – এর জুলাইতে বোমাটি তৈরি হল। বোমা তৈরির পর তার প্রথম পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের ভয়াবহতা এবং ভীষণতা দেখার পরে ওপেনহাইমার স্বয়ং পরবর্তীকালে প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়ারের কাছে আণবিক বোমার প্রচণ্ড ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা সম্বন্ধে সাধারণ মানুষকে অবহিত করার আবেদন পেশ করেন।

ওপেনহাইমারের এই আবেদন দেশের নিরাপত্তা রক্ষার কারণে নাকচ হয়েছিল। কিন্তু আণবিক বোমার আবিষ্কর্তা তারপর বারবার শাস্তি ও মানব – কল্যাণের কাজে আণবিক শক্তিকে কাজে লাগানোর কথা বলেন।

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার এর পুরস্কার ও সম্মান: J. Robert Oppenheimer’s Awards And Honors

১৯৬৩ খ্রিঃ প্রেসিডেন্ট কেনেডির অনুমোদনে ওপেনহাইমারকে আণবিক শক্তি কমিশনের ৫০ হাজার ডলার মূল্যের এনরিকো ফারমি পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৪৭ খ্রিঃ থেকে ওপেনহাইমার প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডি -এর মুখ্য অধিকর্তা হিসেবে আসীন ছিলেন।

জুলিয়াস রবার্ট ওপেনহেইমার এর রচনা: Written by J. Robert Oppenheimer

১৯৬৭ খ্রিঃ বিশ্ববিশ্রুত এই আমেরিকান বিজ্ঞানীর জীবনাবসান হয়।

Leave a Reply