বেঙ্গলি পোর্টাল: আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরও একটি বড় ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বাঁকুড়ার খাতড়ায় জনসভা থেকে ঘোষণা করলেন, বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে আদিবাসীদের আবেগের কথা মাথায় রেখে ছুটি দেওয়া হবে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের জনসমর্থন অটুট রাখতেই যে তাঁর এই সিদ্ধান্ত, তা বুঝতে অসুবিধা নেই সামান্য রাজনৈতিক জ্ঞান সম্পন্ন মানুষের।
গত ৫ নভেম্বর রাজ্য সফরে এসে বাঁকুড়ার পুয়াবাগানে এক আদিবাসীর মূর্তিতে মাল্যদান করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। পরবর্তী সময়ে শাসকদল দাবি তোলে, ওই মূর্তিটা আদিবাসী নেতা বিরসা মুন্ডার নয়, তা এক আদিবাসী শিকারির। এ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে অনেক জলঘোলা হয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব মূর্তির শুদ্ধিকরণ করেন। এরপর স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সেখানে গিয়ে ঘোষণা করেন, ওই মূর্তির পাশে ৪০ ফুট উঁচু বিরসা মুন্ডার মূর্তি তৈরি করে দেবেন। অচিরেই রাজ্য রাজনীতিতে সামগ্রিকভাবে বেশ গুরুত্ব পেয়ে যায় বিরসা মুন্ডার নাম।
❒ প্রতিদিনের তাজা খবর পেতে ফেসবুক পেজ ও টেলিগ্রামে যুক্ত হন:
তাই এইবার বাঁকুড়া সফরে এসে অমিত শাহকে বিঁধলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, “যে মূর্তিতে মালা দেওয়া হয়েছিল, তা তো বিরসা মুন্ডারই নয়। এক আদিবাসী শিকারির। আমি শিকারি বলে তাঁকে ছোট করছি না, সেও আমার ভাই। কিন্তু এই মিথ্যাচারটা হল কেন?” এরপরই তাঁর ঘোষণা, আদিবাসী ভাইবোনেদের আবেগের কথা মাথায় রেখে এরপর থেকে সংগ্রামী বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে ছুটি দেওয়া হবে। সেটাই হবে প্রকৃত সম্মান জ্ঞাপন। এই ঘোষণার পরই উচ্ছ্বাসে ভাসেন উপস্থিত জনতা।
আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষকে ডোবার জলে স্নান করিয়ে স্যানিটাইজ করানোর কথা বললেন অনুব্রত মণ্ডল
আদিবাসীদের প্রতি কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘লোকদেখানো’ মনোভাবকেও তীব্র ভাষায় কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী। অমিত শাহর আদিবাসী বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজ নিয়ে বলেন, “ফাইভ স্টার হোটেল থেকে রান্না করা খাবার এনে আদিবাসীদের বাড়িতে বসে খাওয়া! এখন সবাই সবটা জেনে গিয়েছে। আদিবাসী পরিবারে রান্না হওয়া খাবারটা তো খাননি উনি। মা-বোনেরা ধনেপাতা কাটছে, বাঁধাকপি কাটছে। ওই ধনেপাতা কোনও খাবারে তো ছিল না। বাঁধাকপি কোথায়? পোস্তর বড়া খেয়েছে আমি এমনটা করি না। আমি কোনও আদিবাসীর বাড়িতে গেলে, তাদের খাটিয়ায় বসি।” প্রসঙ্গত, এর আগেও রাজ্যে ভোটের প্রচারে এসে নকশাল বাড়িতে এক আদিবাসী পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ করেছিলেন অমিত শাহ। তা নিয়েও বিস্তর রাজনীতি হয়েছিল। তাই বলাই যায় এই ঘটনাটি যে রাজ্য রাজনীতিতে বিশেষ ছাপ ফেলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
