ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

চোখের সমস্ত সমস্যার সমাধান

চোখের সমস্ত সমস্যার সমাধান
চোখের সমস্ত সমস্যার সমাধান

চোখের সমস্ত সমস্যার সমাধান: আজকের দিনে চোখের রোগ বা সমস্যা টি হলো একটি সবচে বড়ো সমস্যা। আর আজ আমরা চোখের সমস্ত রোগের বা সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনার করবো। প্রথমত বলি যে, আমাদের চোখের নানা সমস্যা আছে যেমন-চোখে অল্প দেখা, লাল-হলুদ হয়ে যাওয়া, চোখ ওঠা, চোখ দিয়ে জল কাটা, চোখ জ্বালা করা ইত্যাদি নানা সমস্যা হয়ে থাকে। যার ফলে আমরা নানা সমস্যার মধ্যে পড়ি এবং এই সমস্ত সমস্যার সমাধান নিয়ে তোমাদের সকলকে জানাবো। চোখের যে কোনো সমস্যা হলে শিঘ্রই তার পরিচর্চা করুন তা না হলে কোনো বড়ো সমস্যার মধ্যে পড়তে পারেন। আসলে আমরা নিজেরাই এই সমস্যার জন্য দায়ী। আসুন আমরা দেখনি কি কি সমস্যা হয় চোখে।

চোখের নানান রোগ গুলি (All eye problems):

  • চোখ লাল হওয়া বা যন্ত্রনা করা
  • চোখ জ্বালা ও জল পড়া
  • রাতকানা রোগ
  • চোখ ওঠা
  • লাল-হলুদ হয়ে যাওয়া
  • চোখে অল্প দেখা ইত্যাদি

চোখ লাল হওয়া বা যন্ত্রনা করা:-

চোখ লাল হওয়াটা আমরা মনে করি যে এটা তেমন কোনো ব্যাপার না কিন্তু এটা পরবর্তী কালে যে কোনো বড়ো সমস্যা তৈরী করবে না তার কোনো গ্যারান্টি নেই।চোখ আমাদের একটি অমূল্য রত্ন যা আমাদের কে পৃথিবীর আলো দেখতে সাহায্য করে।

কারণ গুলি:-

১. চোখ লাল হওয়ার নানা কারণ রয়েছে যেমন – হঠাৎ আপনার চোখে কিছু (ধুলো, বালি, পোকা)পড়লো আর আপনি হাত দিয়ে চোখ টাকে রগড়াতে থাকেন সারাক্ষন যার ফলে চোখ লাল হয়।আবার কোনো রকম ভাবে আঘাত পেলে চোখ লাল হতে ওপারে।

২. তাছাড়া আরেক একটি বিশেষ কারণ হলো আমরা বাইক, সাইকেল ,বা কোনো গন্তব স্থলে যাওয়ার সময় তিব্র গতি তে আশা বায়ু চোখে এসে পড়ে যার ফলে চোখ থেকে জল পড়তে থাকে এবং ওই বায়ুর সাথে ভেসে আশা ধুলো-বালি,এছাড়া কোনো বিষাক্ত পোকা চোখে পড়াতে চোখ লাল হয় বা চোখ ফুলতে পারে ও ব্যাথা ও হয়।

আরও পড়ুন: আপনি কি অনিদ্রা রোগে ভুগছেন? রাতে ঘুম হচ্ছেনা আসুন জেনেনিন অনিদ্রা কি ও তার প্রতিকার

৩. আবার কোনো তীক্ন লাইট এর আলো বা সূর্যের দিকে অনেক খন তাকিয়ে থাকলে, এবং শরীর গরম হলে,বিড়ি, সিগারেট, মদপান,করলে শরীর খারাপ ও জর হলে চোখ লাল হয়ে যায় বা রান্নার ধোয়া চোখে লাগলে চোখ লাল ও চোখ ফুলতে পারে ও বড়ো কোনো সমস্যা হতে পারে তবে ব্যয় পাওয়ার কিছু নেই। এর সমাধান ও আছে।

প্রতিকার ও সমাধান – Solve All Eye Problems

১. চোখ লালা বা যন্ত্রনা হলে গাঁধা ফুলের রস ১ ফোঁটা করে চোখে দিতে হবে দিবে দুবার প্রতি দিন দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমোনোর সময় ও রাতে ঘুমোনোর সময় দিতে হবে ৩ দিন।

২. একটি আমলকী ছোট দু-টুকরো করে গরম জলে ধুয়ে নিয়ে নিতে হবে পরে ৪-৫ চামচ গরম জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে পরের দিন সকালে ছেঁকে নিয়ে ২-৩ ফোঁটা চোখে দিতে হবে এবং একটু বিশ্রাম নিতে হবে।

৩. হাতি শুঁড় পাতার রস দু-ফোঁটা করে আক্রান্ত চোখে দিতে হবে দিনে দুবার দুপুরে বিশ্রামের সময় ও রাতে ঘুমোনোর সময় ৩ দিন।

চোখ জ্বালা ও জল পড়া:-

সাধারণত চোখ জ্বালা ও জল পড়াটা হলো একটা খারাপ লক্ষণ,শরীর অশুথ হলে এই সমস্যা গুলি দেখা যাই তবে এগুলি তেমন ভাবার বিষয় নয়,তবে যদি অতিরিক্ত জলপড়া বা অতিরিক্ত জ্বালা করা খুব একটা ভালো দিক নয় এমন অবস্থায় আপনি দেরি না করে ভালো কোনো চোখের ডাক্তারের কাছে যান এবং পরামর্শ নিন তবে এর কিছু ঘরোয়া সমাধান আছে যার সাহায্যে এর সমাধান করা যায়।

কারণ গুলি :-

চোখ জ্বালা বা জল পড়ার নানা কারণ আজ আপনা দের বলবো ও জানাবো যাহাতে আপনারা আগে থেকেই সাবধান হতে পারেন।


১. প্রথমত বলি যে অতিরিক্ত রাত জাগা ও ঠিক মতো ঘুম না হওয়ায় এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে এটি হতে পারে।
২. আবার সারা ক্ষণ মোবাইল এর দিকে তাকিয়ে ভিডিও, গেমস,এর ফলে মোবাইল বা টিভির অতিরিক্ত লাইট চোখে পড়ে যার ফলে চোখের রেটিনা দুর্বল হয়ে পড়ে এর ফলে এই রোগ ও চোখে অল্প দেখা বা ঝাপসা লাগে।

৩. চোখ অতিরিক্ততো জ্বালা করাতে চোখে কোনো রকম ভাবে হাত দিয়ে রগড়া বেননা তাহলে চোখের কোনো জায়গা তে ইনফেকশন হতে পারে এতে কোনো বড়ো সমস্যা হাপাতে পারে।

প্রতিকার ও সমাধান:-


১. চোখ জ্বালা বা জল পড়লে ৫-৬টি অপরাজিতার পাতা বেটে কপালে লাগালে জলপড়া ও চোখ জ্বালা থেকে আরাম পাওয়া যায়।


২. গিমে শাকের পাতা আগুনে সেঁকে তার রস চোখে ২-৩ফোঁটা করে দিলে উপশম হয়। আবার এই শাক এর ওই রস চোখে পিচাটি পড়লে, চোখ কর্কর করলে ২-৩ ফোটা দিলে উপকার পাওয়া যায়।

দৃষ্টি শক্তি কমে গেলে চোখের জ্যোতি কিভাবে বাড়াবে (Eye problem):-

চোখের সবচে বড়ো সমস্যা হলো দৃষ্টি শক্তি কমেযাওয়া এর ফলে আমাদের নানা সমস্যার মুখে পড়তে হয়। একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর সকলের দৃষ্টি শক্তি কমে যায় ৪০ বছর বয়সের পরথেকে এই সমস্যা টি দেখা যায়। তবে কিছু জিনিস ঠিক মতো ব্যবহার করলে এর প্রকোব থেকে বের হওয়া যায়। সেগুলি হলো :-


১. প্রতিদিন সকালে ২ চামচ হেলেঞ্চার রস গরম দুধের সাথে মিশিয়ে সেবন করলে দৃষ্টি শক্তি হ্রাসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।


২. ডিমে থাকা উপকারী পদার্থ শরীরে লুটেইন, জিয়াক্সেনথিন এবং জিঙ্কের পরিমাণ বাড়তে শুরু করে। এই উপাদানগুলি চোখের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে দারুন ভাবে সাহায্য করে থাকে।


৩. ডিমের সাদা অংশ ছাড়াও সবুজ শাক-সবজিতেও থাকে প্রচুর লিউটিন। চোখের জ্যোতির জন্য ক্ষতিকর খাবারেরও একটি তালিকা দিয়েছেন পুষ্টিবিদ্যমান যেসব খাদ্য কম খাওয়া উচিত অথবা পরিহার করা উচিত তা হচ্ছে সুগার, প্রক্রিয়াজাত ময়দা, ট্রান্সফ্যাট (বনস্পতি) ও ধূমপান।

৪. মৌসম্বি লেবু, কমলা লেবু এবং পাতি লেবু বেশি করে খাওয়া শুরু করুন। এই সব ফলে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি রয়েছে। এই ভিটামিগুলো ছানি প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখে। সেই সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিরও উন্নতি ঘটে।


৫. স্নায়ুবিক, দুর্বলতা,অতিরিক্ত মাদকদ্রাব পান,অল্প আলো তে পড়াশোনা করা,জোরালো মোবাইল ও টিভির আলোর দিকে বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের দৃষ্টিশক্তি কমতে থাকে। হেলেঞ্চে ভাতে ও কলমি শাক ভাতে প্রতিদিন দুপুরে গরম ভাতে সেবন করতে হবে।

৬. সবুজ শাক ও সবজি বর্তমান প্রজন্মে অনেকেই তেমন একটা পছন্দ করেন। কিন্তু শাক না খেলে চোখের স্বাস্থ্যের তেমন উন্নতি ঘটেনা। আর চোখে যদি দৃষ্টিশক্তি ভালোনা থাকে, তাহলে নানা সমস্যার স্মুখীন হতে হয় অনেক সময় অন্ধত্ব ও দেখাদিতে পারে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা অনেকেই চশমা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু চশমার ব্যবহার টাই মূল সমাধান নয়। কেননা বয়স যত বাড়তে থাকে ততো চোখের দৃষ্টিশক্তি ও কমতে থাকে।তাই নিয়ম করে প্রতিদিন সবুজ শাক-সবজি খেতে হবে। কারণ সবুজ শাক-সবজি তে প্রচুর পরিমানে এন্টিঅক্সিজেন এবং জিয়েক্সেনথিন নাম বেশ কিছু উপকারী ভিটামিন উপাদান থাকে। এই সমস্ত উপাদানগুলি ছানি ছাড়া ও চোখের নানা রোগ থেকে আমাদের কে মুক্তি দিতে পারে।


৭. এলাচ ৪ গ্রাম মাত্রায় সকালে খেলে এক মাস থেকে ৪০ দিনের মধ্যে দুর্বল দৃষ্টিশক্তি দূর হয়। চোখ ঠাণ্ডা হয়, চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ে।


৮. রাতের বেলায় একটা পাত্রে দু’চামচ ত্রিফলা চূর্ণ ভিজিয়ে রাখুন। সকালে উঠে পরিষ্কার কাপড়ে ছেঁকে নিয়ে ঐ জল দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন অথবা ঐ জল নিয়ে চোখের ওপর ছিটে দিন।এতে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ে, বৃদ্ধাবস্থাতেও চোখ নির্মল ও সতেজ থাকবে।

৯. পুষ্টিবিদগণের মতে চোখের জ্যোতি বা দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, বিটা ক্যারোটিন ও লিউটিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে উপকারী। ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড প্রধানত আসে মাছ থেকে। এছাড়া ফ্লাক্স সিডস, ওয়ালনাটস, পেশতা ও বাঁধাকপিতে পাওয়া যায় এধরনের চর্বি। আর বিটা ক্যারোটিন পাওয়া যায় গাজর এবং সবুজ শাক-সবজি, ফলমূলে। লিউটিন পাওয়া যায় ডিমের সাদা অংশে। চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে এই লিউটিন সহায়ক।


১০. যদি দেখা যায় চোখের দৃষ্টি ক্রমশঃ স্তিমিত হয়ে আসছে তাহলে কমলা লেবুর রসে বাটা গোলমরিচ ও সৌন্ধব লবণ মিশিয়ে সকাল-বিকাল সেবন করতে হবে। অন্ততঃ তিনমাস এভাবে নিয়মিত সেবন করতে হবে।এতে উপকার পাওয়া যাবে।


১১. শোয়ার সময় সপ্তাহে তিন দিন তুলোর মোটা পলতে দুধে ভিজিয়ে চোখে রেখে তার ওপর পটি বেঁধে দিলে চোখ ভালো থাকে। আবার কখনো কখনো ফুটিয়ে ঠাণ্ডা করা শীতল ও স্বচ্ছ দুধ দু’তিন ফোঁটা চোখে দিলে চোখ শীতল থাকে এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি কখনো ক্ষীণ হয় না ও চোখ সুস্থ সবল থাকে।

১২. বাদামের ৮-১০ টি দানা (অর্থাৎ শাঁস) রাতে জলে ভিজিয়ে রেখে সকালে ভালো করে চিবিয়ে খেয়ে খানিকটা দুধ খেয়ে নিতে হবে। এতে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ার সঙ্গে বলবৃদ্ধিও হবে। ও শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে।


১৩. ধনে পিষে নিয়ে তার রস বের করে দু’ফোঁটা করে প্রতিদিন দু’চোখে দিলে চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি হয় বলে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয়েছে।


১৪. এক কাপ গাজরের রসে পৌনে এক কাপ পালং বা চৌলাইয়ের শাকের রস মিশিয়ে সকালে সূর্যোদয়ের সময়ে এবং বিকালে সূর্যাস্তের সময়ে নিয়মিত সেবন করতে পারলে সেবনকারীর চশমার দরকার পড়বে না কোনো দিন।

রাতকানা রোগ হলে কি করবেন:-

রাতকানা রোগ হয় মূলত ভিটামিন-এ এর অভাবে। রাতকানা শিশুরা সাধারণত দিনের বেলায় ভালো ভাবে দেখতে পারে কিন্তু রাতে অথবা অন্ধকার ঘরে অল্প আলোতে ঠিকমতো দেখতে পায় না। সে কেবল অনুমানে চলাফেরা করে।

১. তুলসী পাতার রস ১ ফোঁটা করে ২টি চোখে দিতে হবে এই ভাবে ১ মাস সকাল-সন্ধ্যায় দিতে হবে বিশ্রাম নেওয়ার সময় এবং প্রতিদিন ১০টি তুলসী পাতা ভালো করে ধুয়ে নিয়ে খালি বা ভরা পেটে সেবন করতে হবে।

২. প্রতিদিন দিন ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে যেমন- গার সবুজ শাক যেমন- কচু-শাক, পুঁইশাক, পালংশাক, মূলা-শাক ইত্যাদি৷ হলুদ সবজি যেমন- মিষ্টি কুমড়া, গাজর ইত্যাদি হলুদ ফল যেমন- পাকা কাঁঠাল, পাকা আম, পাকা পেঁপে ইত্যাদি৷প্রাণী জাতীয় খাদ্য বা প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যেমন- দুধ, ডিমের কুসুম, কলিজা, ছোট মাছ ইত্যাদি৷

  • উপযুক্ত কথা:- মোবাইল, টিভিতে ভিডিও বা গেম খেলার সময় বা কোথাও যাওয়ার সময় ধুলো-বালির হাত থেকে বাঁচার জন্য সবাই চশমা ব্যবহার করতে পারি তবে চশমাতে পারা দাওয়া না থাকে। এবং প্রতিদিন সকালে পরিষ্কার কলের জল দিয়ে চোখ ধুয়ে নেবেন আর রাতে ঘুমোনোর সময় একবার পরিষ্কার জল দিয়ে চোখ ধুয়ে ঘুমাবেন। এতে সারাদিনের সমস্ত ময়লা ধুলো-বালি পরিষ্কার হয়ে যাবে ও চোখ সুস্থ থাকবে এবং তীক্ষন্ন দৃষ্টিশক্তির অধিকারী হবেন।

Leave a Reply