Bengaliportal: শিক্ষাশেষে চাকরি বা স্বাধীনভাবে নিজের পায়ে দাঁড়ানো। কিন্তু এই সাফল্যটা আসবে কোন পথে? কী পড়ব বা কোথায় পড়ব? প্রথাগত শিক্ষা না অন্য কিছু? পড়ুয়া এবং তাদের অভিভাবকদের এই প্রশ্নের সঠিক এবং সময়োপযোগী উত্তর দিতে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে তিনদিনের জন্য শুরু হল ‘এডুকেশন ইন্টারফেস ২০২২’। আয়োজক ‘কেরিয়ার প্ল্যানার’। শনিবার ৪ জুন থেকে চালু হয়ে এই বিশেষ মেলা চলবে ৬ জুন পর্যন্ত। রাজ্য সরকার ছাড়াও এই মেলার আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘শিক্ষায় এখন একটা নতুন দিগন্ত এসেছে। সাধারণ শিক্ষার ধরনটার পরিবর্তন হয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আগামী দিনে এই রাজ্যে যা কাজের সুযোগ আসবে তা আর কোথাও আসবে না। কারণ শিল্পপতিরা বুঝেছেন বিনিয়োগের জন্য এই রাজ্য হল দেশের মধ্যে সেরা। যেভাবে এখানে পড়ুয়াদের তাদের ভবিষ্যত পেশার প্রয়োজনে ‘কাউন্সেলিং’ বা পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেভাবে যাতে নবম শ্রেণি থেকেই একটা সর্বাঙ্গীণ পরামর্শ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় সেই বিষয়ে আমি অনুরোধ করব।’
রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সমাজের পরিবর্তনের সঙ্গে লেখাপড়ার ধরনেরও পরিবর্তন হচ্ছে এবং এটাই বিজ্ঞান।’
পেশাগত প্রয়োজনে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থায় যে পড়ুয়ারা অনেক বেশি সহযোগিতা পাচ্ছেন সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় পড়ুয়ারা অনেক বেশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির উদ্যোগে রাজ্য সরকার তাদের নানারকম সুবিধা দিচ্ছে। রাজ্য সরকারের ‘কর্মদিশা’ অ্যাপে অনলাইনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ইন্টারভিউ দিয়ে ব্যাঙ্কে সরাসরি চাকরি
আধুনিক যুগে প্রযুক্তির ব্যবহার যে সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি সে বিষয়টি তুলে ধরে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির (এসএনইউ) আচার্য সত্যম রায়চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি যত বেশি প্রযুক্তিকে গুরুত্ব দেবে, পড়ুয়াদের সামনে তত বেশি কর্মসংস্থানের দরজাটা খুলে যাবে। বিশ্বায়ন চাকরির সুযোগ অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে।’
আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের কো চেয়ারম্যান মানসী রায়চৌধুরী বলেন, ‘সামনের দিকে তাকাতে হবে। এই ধরনের মেলা এমন একটা মঞ্চ যেখানে পড়ুয়ারা তাদের আগামী দিনের দিশা পাবেন। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক বেশি বাস্তবসম্মত।’ পাশাপাশি পড়ুয়াদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, তারা যেন পরস্পরের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।
অনুষ্ঠানে ছিলেন এসএনইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সুরঞ্জন দাস, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈকত মৈত্র, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ড. চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য, জেআইএস গ্রপের কর্ণধার তরণজিৎ সিং, অ্যাডামাস ইউনিভার্সিটির আচার্য শমিত রায়, ওম দয়াল গ্রুপের সেক্রেটারি অলোক টিব্রেওয়াল, হাওড়া ইনপ্রুভমেন্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিশ্ব মজুমদার প্রমুখ।
আয়োজকদের পক্ষে জানানো হয়েছে, পড়ুয়া ছাড়াও তাদের অভিভাবক এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত নানা সমস্যা সমাধানের জন্য একত্রিত করা হচ্ছে। এডু ফেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা দীপক সিংহ রায় জানিয়েছেন, বিগত দু’ দশকের বেশি সময় ধরে অসংখ্য পড়ুয়াকে তাঁরা সঠিক দিশা দেখিয়ে এসেছেন এবং ভবিষ্যতেও একইভাবে এগিয়ে যাওয়ার আশা রাখেন।