নিঃস্বার্থভাবে যদি কেউ ভালোবেসে থাকে তবে সেটা তিনি,কোনো আশা আকাঙ্খা ছাড়া যিনি আমাদের ভালোবেসে চলেছেন সেটা তিনি,শত আঘাত লাগা সত্বেও যিনি আমাদের বিন্দুমাত্রও বুঝতে দেননা ! সেই তিনি আর কেউ না, তিনি আমাদের জন্মদাত্রী মা।প্রত্যেক মায়ের কাছে তার সন্তান সবকিছুর থেকে বেশি মূল্যবান।
একজন সন্তানের কাছেও তার মা হলেন স্বয়ং ঈশ্বর।আর কালের নিয়মে যখন সেই জন্মদাত্রী মা যখন আমাদের ছেড়ে চলে যান, আমাদের উপর থেকে ঠিক যেন একটা ছাদ চলে যায়। তারপর আমরা একসময় সবকিছুর সাথে নিজেদের মানিয়ে নিই এবং চেষ্টা করি মায়ের ছোটো ছোটো প্রিয় ইচ্ছা এবং শখ সবকিছু বাঁচিয়ে রাখতে।
আজ আমরা কথা বলবো পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর ব্লকের জোতশ্রীরাম গ্রামের এক রত্নগর্ভা মায়ের চার সন্তানের সাথে।গত ১০ই জুন নিজবাসভবন কারকুনবাটিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন জোতশ্রীরাম গ্রামের বাসিন্দা স্বর্গীয়া মীনারাণী মিত্র মহাশয়া।তাঁর চার সন্তান -চন্দ্রনাথ,শঙ্খনাথ,সুবীরনাথ এবং ব্রজদুলাল।আমরা অনেক সময় আমাদের প্রিয়জন গত হলে তার আত্মার শান্তি কামনায় কম্বলদান অথবা পোশাক দান করি, কিন্তু স্বর্গীয়া মীনারাণী দেবী আত্মার শান্তি কামনা এক অন্যরকম পথ অনুসরণ করলেন তাঁর চার পূত্র। স্বর্গীয়া মীনারাণী দেবী অত্যন্ত প্রিয় এবং ভালোবাসার বস্তু ছিল ‘গাছ’। তাঁর বাড়িতে রয়েছে তার নিজের তৈরি করা অনেক রকমের গাছ। মায়ের সেই প্রিয় শখ এবং ভালোবাসাকে সম্মান জানাতে আজ তাঁর শ্রাদ্ধ ক্রিয়ার শেষ দিনে গ্ৰামবাসীদের হাতে একটি করে মেহগনি গাছ তুলে দিলেন তাঁর পুত্ররা।
মীনারাণী দেবীর পূত্র ব্রজদুলাল বাবু বলেন-‘মায়ের খুব প্রিয় জিনিস ছিল গাছ। বাড়িতে মায়ের নিজের হাতে তৈরি বহু গাছ রয়েছে। ছোটোবেলা থেকেই আমরা দেখে আসছি মা সংসারের কাজ সামলে যতটা সময় পেতেন নতুন নতুন গাছ লাগাতেন এবং পরিচর্যা করতেন।আজ মা আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু মায়ের তৈরি গাছগুলো আমাদের মাঝে মায়ের আশীর্বাদের মতো রয়ে গেছে। মায়ের প্রিয় শখ এবং ভালোবাসাকে সম্মান জানিয়েই আমরা চারভাই এবং পরিবারের সকলে মিলে আজ গ্ৰামবাসীদের হাতে একটি করে মেহগনি গাছ তুলে দেবো’।
গ্ৰামবাসীরা বলেন- ‘মীনারাণী দেবীর পরিবারের এই উদ্যোগ সত্যি প্রশংসনীয়। এই গাছগুলির মধ্য দিয়েই মীনারাণী দেবী আমাদের সকলের কাছে চির অমর হয়ে থাকবেন ‘।
আমাদের চ্যানেলের পক্ষ থেকে স্বর্গীয়া মীনারাণী দেবীর আত্মার শান্তি কামনা করি এবং ওনার পরিবারকে সাধুবাদ জানাই এরকম এক অভাবনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য।