ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

খান আবদুল গফফর খান জীবনী – Abdul Ghaffar Khan Biography in Bengali

Abdul Ghaffar Khan Biography in Bengali
Abdul Ghaffar Khan Biography in Bengali

খান আবদুল গফফর খান জীবনী: Bengaliportal.com আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Abdul Ghaffar Khan Biography in Bengali. আপনারা যারা খান আবদুল গফফর খান সম্পর্কে জানতে আগ্রহী খান আবদুল গফফর খান এর জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

খান আবদুল গফফর খান কে ছিলেন? Who is Abdul Ghaffar Khan?

খান আবদুল গফফর খান (সীমান্ত গান্ধী বা বাচা খান এবং ফখর-ই-আফগান নামেও পরিচিত।) (৬ ফেব্রুয়ারি ১৮৯০ – ২০ জানুয়ারি ১৯৮৮) ভারতে ব্রিটিশ শাসনে তার অহিংসের জন্য একজন পশতুন বংশোদ্ভূত ভারতীয় রাজনৈতিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তৎকালীন ভারতের উত্তর- পশ্চিম সীমান্তে বিশৃঙ্খলা ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রোধে মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতি প্রচার ও ধারণ করার জন্য তাকে সীমান্ত গান্ধী উপাধী দেয়া হয় বলে ধারণা করা হয়। এছাড়াও তিনি সর্বদাই মহাত্মা গান্ধীর অহিংস নীতির একজন একনিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন।

খান আবদুল গফফর খান জীবনী – Abdul Ghaffar Khan Biography in Bengali

নামখান আবদুল গফফর খান
জন্ম6 ফেব্রুয়ারি 1890
পিতাআব্দুল বাহরাম খান
মাতা
জন্মস্থানউটমানজাই, পাঞ্জাব, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে খাইবার পাখতুনখোয়া, পাকিস্তান)
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয় (1890-1947)
পাকিস্তানি (1947-1988)
পেশাস্বাধীনতা সংগ্রামী
মৃত্যু20 জানুয়ারী 1988 (বয়স 97)

bengaliportal

 

খান আবদুল গফফর খান এর জন্ম: Abdul Ghaffar Khan’s Birthday

খান আবদুল গফফর খান 6 ফেব্রুয়ারি 1890 জন্মগ্রহণ করেন।

খান আবদুল গফফর খান এর পিতামাতা ও জন্মস্থান: Abdul Ghaffar Khan’s Parents And Birth Place

গান্ধীজির একান্ত অনুগামী সীমান্ত প্রদেশের আবদুল গফফর খাঁ তার কর্মসাধনার জন্য ভারতবাসীর নিকট সীমান্তগান্ধী নামেই সমধিক পরিচিত। ১৮৩০ খ্রিঃ অবিভক্ত ভারতবর্ষের আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী তৎকালীন উত্তরপশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে এক নিষ্ঠাবান সুন্নী পরিবারে আবদুল গফফর খাঁর জন্ম। পারিবারিক ধর্মীয় পরিবেশে ছোটবেলা থেইে তিনি সৎ নিষ্ঠাবান এবং আদর্শবাদী হয়ে গড়ে উঠেছিলেন। যৌবনে অসাধারণ সাংগঠনিক পরিচয় দিয়ে তিনি নিজেকে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করেন।

আরও পড়ুন: ফা-হিয়েন জীবনী

আরও পড়ুন: চার্লি চ্যাপলিন জীবনী

আরও পড়ুন: হেলেন কেলার জীবনী

আরও পড়ুন: সক্রেটিস জীবনী

আরও পড়ুন: ভীমরাও রামজি আম্বেদকর জীবনী

খান আবদুল গফফর খান এর কর্ম জীবন: Abdul Ghaffar Khan’s Work Life

বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে ভারতের রাজনীতিতে গান্ধীজির আগমন। সেই সময় থেকেই গফফর খাঁ গান্ধীজির অন্যতম অনুগামী হয়ে ওঠেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থানকালে গান্ধীজি ইংরেজের বর্ণবৈষম্য নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গঠন করেছিলেন। গফফর খাঁ সেই সময় থেকেই গান্ধীজির অহিংসা ও সত্যনিষ্ঠার আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইংরাজ সরকার ভারতবর্ষে যে দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেছিল আবদুল গফফর খাঁ সেই নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন।

তৎকালীন তুরস্কের সুলতানকে ভারতবর্ষ তথা বিশ্বের সুন্নী মুসলমান সম্প্রদায় তাদের খলিফা বা ধর্মগুরু বলে মান্য করতেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্ক সরকার মিত্রশক্তির বিরোধীপক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। যুদ্ধের অবসান ঘটলে ইংরাজ সরকার তুরস্ক সুলতানের ক্ষমতা খর্ব করার প্রয়াসী হয়। খলিফার এই অপমানকে ভারতীয় সুন্নী মুসলমানগণ তাদের ধর্মের অপমান বলেই গণ্য করেন। তারা সমগ্র ভারত জুড়ে ইংরাজের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন।

এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন মহম্মদ আলি ও সৌকত আলি ভ্রাতৃদ্বয়। সুন্নী মুসলমানদের ইংরাজ বিরোধী এই আন্দোলনই ভারতবর্ষের ইতিহাসে খিলাফৎ আন্দোলন নামে পরিচিত। গান্ধীজি এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। এর ফলে হিন্দু ও মুসলমান, ভারতের দুই প্রধান জনগোষ্ঠীর মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠার বাতাবরণ তৈরি হয়। ভারতব্যাপী এই আন্দোলনকে সফল করার জন্য গান্ধীজির আদর্শে অনুপ্রাণিত গফফার খাঁ খোদা – ই – খিদমতগার অর্থাৎ ঈশ্বরের সেবক নামে এক সুশৃঙ্খল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তোলেন।

সীমান্ত প্রদেশে খিলাফৎ ও গান্ধীজির অসহযোগ এই দুই আন্দোলনই সফলতা লাভ করেছিল। গান্ধীবাদী নেতা গফফর খানের অসাধারণ সাংগঠনিক ক্ষমতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বেই তা সম্ভবপর হয়েছিল। এই সময় থেকেই তিনি সীমান্তগান্ধী আখ্যায় ভূষিত এবং বিশ্ব পরিচিতি লাভ করেছেন। গফফর খাঁ ছিলেন সমস্ত সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে আদর্শবাদী জন নেতা। ব্যক্তিগত জীবনে নিষ্ঠাবান মুসলমান হয়েও আজীবন তিনি সকলপ্রকার সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নির্ভীক যোদ্ধার মত সংগ্রাম করেছেন।

মহম্মদ আলী জিন্নার নেতৃত্বে মুললিম লীগ ভারতবর্ষ জুড়ে দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রচারে সোচ্চার হয়ে উঠেছিল। গফফর খাঁ এই সঙ্কীর্ণ নীতি কখনোই সমর্থন করেননি। তিনি তার সর্বশক্তি দিয়ে মুসলিম লীগের বিদ্বেষমূলক নীতির বিরোধিতা করেছেন। তিনি নির্ভীক দৃঢ়তায় ঘোষণা করেছেন, হিন্দু মুসলমান কখনোই দুটি পৃথক জাতি নয়— দুটি সম্প্রদায় মাত্র। তিনি ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে খন্ডিত করে মুসলমানদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র গঠনের উদ্যোগকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করেছেন।

গান্ধীজি এবং গফফর খানের মত মহান নেতাদের আপ্রাণ চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত ভারত ভাগ হয়েছিল। জন্ম হয়েছিল নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের। সমাজকে সাম্প্রদায়িকতার বিষমুক্ত করতে গান্ধীজি যেমন ব্যর্থ হয়েছিলেন, গফফর খাঁকেও প্রাণপণ চেষ্টা সত্ত্বেও হার মানতে হয়েছিল। মুসলিম লীগের অনমনীয় মনোভাবের জন্যই সাম্প্রদায়িক শক্তি প্রশ্রয় ও বৃদ্ধি লাভ করেছিল, সকলকেই মেনে নিতে হয় ভারত ভাগের সিদ্ধান্ত।

১৯৪৭ খ্রিঃ ভারতবর্ষ দ্বিখন্ডিত হল। ভারত ও পাকিস্তান নামে দুই পৃথক রাষ্ট্র হিসাবে স্বাধীনতা লাভ করল। হতাশ ক্ষুব্ধ গফফর খাঁ রাজনীতির ক্ষেত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন। উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে তার গ্রাম পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। তিনি সেখানে গিয়েই বসবাস করতে থাকেন। যতদিন ভারত অখন্ডিত ছিল, গান্ধীজির ডাকা সকল আন্দোলনেই গফফর খাঁ ছিলেন অগ্রবর্তী সৈনিক। গান্ধীজির ডাকা ১৯৪২ খ্রিঃ ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অংশ গ্রহণকারী জাতীয়তাবাদী নেতাদের মধ্যে গফফর খাঁ ছিলেন প্রথম সারীর অন্যতম।

আরও পড়ুন: ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস জীবনী

আরও পড়ুন: বাঘা যতীন জীবনী

আরও পড়ুন: নেপোলিয়ন বোনাপার্ট জীবনী

আরও পড়ুন: কার্ল মার্ক্স জীবনী

আরও পড়ুন: গুরু গোবিন্দ সিংহ জীবনী

এছাড়া লবন আন্দোলন, ডান্ডি অভিযান ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রেই অহিংস সত্যাগ্রহীদের অগ্রবর্তী ছিলেন তিনি। তার স্বক্ষেত্র উত্তর – পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে দেশ বিভক্ত হওয়ার আগে যে ধর্ম নিরপেক্ষশক্তির প্রভাব লক্ষিত হয়েছিল তার মূলেও ছিল গফফর খাঁ – এর ব্যক্তিত্ব ও সফল নেতৃত্ব। এই উপমহাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সমাজবাদী মানুষের কাছে আজও তিনি তার উদার সনিষ্ঠ মত ও জীবনচর্যার জন্য আদর্শ পুরুষরূপে স্মরণীয় হয়ে আছেন।

গফফর খানের স্বপ্ন ছিল, শ্রেণীহীন, শোষণহীন, ধর্মীয় ভেদাভেদ মুক্ত সমাজতান্ত্রিক স্বাধীন সার্বভৌম অখন্ড ভারতবর্ষ গড়ে তোলা। আজীবন তিনি এই লক্ষেই আপোসহীন সংগ্রাম করেছেন। জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তার ইংরাজের কারাগারের অন্তরালে কেটেছে। দেশ ভাগের পর তাঁর জীবনের শেষ পর্বের দিনগুলিও পাকিস্তানের মুসলিম লীগ সরকারের রোষমুক্ত ছিল না। আমৃত্যু তিনি অখন্ড ভারতের সম্ভাবনার স্বপ্নই দেখে গেছেন।

খান আবদুল গফফর খান এর পুরস্কার ও সম্মান: Abdul Ghaffar Khan’s Awards And Honors

১৯৮৭ খ্রিঃ ভারত সরকারের আমন্ত্রণে গফফর খাঁ এদেশে আসেন। ভারত সরকার তাঁকে ভারতরত্ন উপাধিতে ভূষিত করেন। পরের বছরেই তিনি পরলোক গমন করেন।

খান আবদুল গফফর খান এর মৃত্যু: Abdul Ghaffar Khan’s Death

20 জানুয়ারী 1988 খান আবদুল গফফর খান এর জীবনাবসান হয়।

আরও পড়ুন: সত্যেন্দ্রনাথ বসু জীবনী

আরও পড়ুন: কানাইলাল দত্ত জীবনী

আরও পড়ুন: অনন্ত সিং জীবনী

আরও পড়ুন: মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী জীবনী

আরও পড়ুন: প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার জীবনী

Leave a Reply