Bengaliportal: করোনা পরিস্থিতিতে এবছর অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক মূল্যায়ন নেওয়া হয়নি। অষ্টম শ্রেণির সব ছাত্রছাত্রীকেই সরাসরি নবম শ্রেণিতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট বা মার্কশিট মেলেনি। ফলে অনেক পড়ুয়াই পড়েছেন আতান্তরে। ওই নথির অভাবে তাঁরা সরকারি বা বেসরকারি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারছেন না।
রাজ্যের ‘গ্রূপ ডি’ পদের সরকারি চাকরির জন্য অষ্টম শ্রেণি পাশের মার্কশিট বা শংসাপত্র লাগে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় কাজকর্ম করতে গেলেও ওই নথি দাখিল করতে হয়। এ বার পরীক্ষা না-দিয়েই অষ্টম শ্রেণি পাশ করে যাওয়া পড়ুয়াদের একাংশ জানাচ্ছেন, চাকরির আবেদনে তাঁরা অষ্টম শ্রেণি পাশের কী নথি দেখাবেন, তা নিয়ে মহাসমস্যায় পড়েছেন। পরীক্ষা না-হওয়ায় তাঁদের কাছে অষ্টম থেকে নবম শ্রেণিতে ওঠার মার্কশিটও নেই। এই অবস্থায় তাঁদের দাবি, অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থার করুক শিক্ষা দফতর।
❒ প্রতিদিনের তাজা খবর পেতে ফেসবুক পেজ ও টেলিগ্রামে যুক্ত হন:
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতিতে অষ্টম শ্রেণির পাশের সার্টিফিকেট আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কারণ, অতিমারির দাপটে অভিভাবকদের রুজিরোজগার ধাক্কা খাওয়ায় পরিবারের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে। তাই লেখাপড়া ছেড়ে চাকরির চেষ্টা করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। কিন্তু বিভিন্ন চাকরিতে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট তো চাই-ই চাই। কিন্তু তাঁরা যে ওই শ্রেণি পাশ করেছেন, তার কোনও নথিই থাকছে না বহু প্রার্থীর কাছে।
আরও পড়ুন: পিএসির মাধ্যমে জল সম্পদ দপ্তরে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হল
উল্লেখ্য, কিছু কিছু চাকরির ক্ষেত্রে বা চাকরি পাওয়ার পরে ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ বা পুলিশি যাচাইয়ের সময় শুধু অষ্টম শ্রেণি পাশের সার্টিফিকেট নয়, মার্কশিটও লাগে বলে জানান কয়েক জন শিক্ষক। সে-ক্ষেত্রে এ বার যাঁরা অষ্টম শ্রেণি পাশ করলেন, তাঁরা কী দেখাবেন, প্রশ্ন তুলেছেন মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতর যদি এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি দেয় যে, ২০২০ সালে অষ্টম থেকে যাঁরা নবম শ্রেণিতে উঠলেন, তাঁদের মার্কশিট লাগবে না, তা হলে অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ কর্মপ্রার্থীদের সুবিধা হয়। তাঁরা সেই বিজ্ঞপ্তিটাই চাকরির আবেদনের সঙ্গে দেখাতে পারবেন।’’
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশ বিহারের পর এবার মহারাষ্ট্র সরকারও ব্যান করল জিন্স ও টি-শার্ট
কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস জানান, এই শিক্ষাবর্ষে কোনও পড়ুয়ার কাছেই মার্কশিট থাকছে না। তাই শিক্ষা দফতরের তরফে সব ছাত্রছাত্রীকে পাশ সার্টিফিকেট দিলে ভাল হয়। ‘‘শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণি পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের এই শংসাপত্র প্রাপ্য। কিন্তু মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সুস্পষ্ট নির্দেশিকা না-থাকায় বেশির ভাগ স্কুলই অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের পাশের সার্টিফিকেট দেয় না। তাই সমস্যা হচ্ছে,’’ বলেন সৌদীপ্তবাবু।
কিছু শিক্ষক সংগঠনের বক্তব্য, শুধু অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণদের সার্টিফিকেট দিলেই হবে না। অতঃপর পঞ্চম থেকে নবম পর্যন্ত সব শ্রেণির পড়ুয়াদের কাছেই পাশের শংসাপত্র থাকা প্রয়োজন বলে তারা দাবি করেন।