কথায় আছে’ এভরিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ এন্ড ওয়ার’। বাস্তবে দেখা গেল ঠিক এরকমই এক ঘটনা। দীর্ঘ কুড়ি বছর ধরে বাবা করেন সিপিএম। ছেলেও ছিলেন সিপিএম কর্মী। কিন্তু এরপর এক বিজেপি নেতার মেয়ের সাথে সম্পর্ক তৈরি হয় ওই সিপিএম নেতার ছেলের। এরপর তারা বিয়েও করেন বিয়ের পর ছেলে তার পতাকা বদলে ফেলেন। এক সময় সিপিএম করার পর তিনি যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে।
ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। এবার পঞ্চায়েত ভোটে সেই ছেলেটি গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী। এবং সবচেয়ে বড় চমক হলো তার বিরুদ্ধে এবারের ভোট যুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন স্বয়ং তার পিতা।বাঁকুড়ার রানিবাঁধ পঞ্চায়েত সমিতির ৬ নম্বর আসনে তৃণমূলের প্রার্থী থাকলেও সিপিএম প্রার্থী কালীপদ মাহাতো ও তাঁর ছেলে বিজেপি প্রার্থী মহীতোষ মাহাতোর লড়াই এখন আকর্ষণের কেন্দ্রে চলে এসেছে।
রাজাকাটা পঞ্চায়েতের সিন্দুরপুর গ্রামের বাসিন্দা কালীপদ মাহাতো দীর্ঘদিন ধরেই সিপিএম কর্মী বলে পরিচিত। পেশায় ইটভাটার ম্যানেজার কালীপদ একসময় দলের হয়ে স্কুল পরিচালন সমিতির ভোটে জিতেছিলেন। তাঁর ছেলে গেঞ্জিকলের কর্মী মহীতোষও সিপিএম করতেন। ছেলে কিভাবে বিজেপিতে এলো সে বিষয়ে কালীপদ বাবু বলেন, ”কয়েক বছর আগে ছেলে পাশের গ্রামের বিজেপি নেতার মেয়েকে ভালবেসে বিয়ে করেছে। ছেলে নিজের রাজনৈতিক চিন্তাধারায় বিজেপি মনোভাবাপন্ন হয়ে ওই দলের প্রার্থী হয়েছে। সেখানে আমার হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। তবে রানিবাঁধে সিপিএমের ভিত্তি পোক্ত। আমিই জিতব।”
মহীতোষ বাবু বলেন, ”তৃণমূলকে হারাতে পারে একমাত্র বিজেপিই। তাই বিজেপি করছি। বাবার বিরুদ্ধে নামলেও প্রচারে আলগা দেব না।” সিপিএমের রানিবাঁধ এরিয়া কমিটির সম্পাদক মধুসুদন মাহাতো বলেন, ”রানিবাঁধ একসময়ে সিপিএমের শক্ত ঘাঁটি ছিল। মাঝখানে কিছু লোকজন ভুল বুঝে চলে গেলেও সবাই দলে ফিরছেন। তাই ওই আসনে সিপিএমের দীর্ঘদিনের কর্মী কালীপদই বিপুল ভোটে জিতবেন।”
বিজেপির রানিবাঁধ ১ মণ্ডল সভাপতি তপন মাহাতোরও দাবি, ”আমার জামাই মহীতোষ দীর্ঘদিনের বিজেপি কর্মী। তাঁর জয় নিয়ে আমি নিশ্চিত।”রানিবাঁধ ব্লক তৃণমূল সভাপতি চিত্তরঞ্জন মাহাতোর অবশ্য দাবি, ”বিজেপি বা সিপিএমের সংগঠন নেই। ওই আসনে তৃণমূল প্রার্থী শিশির মাহাতোই বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।”