ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

প্রাচীন বাংলার ভাস্কর্যের একটি অন্যতম নিদর্শন রায়নার জোড়া শিবমন্দির।

প্রাচীন বাংলায় ভাস্কর্য গড়ার পাথর সহজলভ্য ছিলো না। সে কারণে প্রাচীন বাংলায় সুপ্রাচীনকাল থেকে নরম আঁঠালো পলিমাটিই ছিলো স্থাপত্য ও ভাস্কর্য নির্মাণের প্রধান উপাদান। তারপরও বাংলায় পাথরে এবং ধাতু গলিয়ে নির্মিত হয়েছে অনেক ভাস্কর্য। বাংলার শিল্পীরাই সেসব গড়েছেন। প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারে দেখা যায় পোড়ামাটির ফলক, ইটে তৈরি বাংলার মন্দির, দেওয়াল। আবার দেখা যায় পোড়ামাটির ফলকে তৈরি করা টেরাকোটা ভাস্কর্য। এসবের বিষয়বস্তু ছিলো দেব বিগ্রহ, বিভিন্ন প্রাচীন মহাকাব্য ও পুরাণে বর্ণিত অতিমানব ও সাধারণ নারী–পুরুষের প্রতিমূর্তি, অলংকারিকভাবে গড়া ফুল, লতাপাতা, পশু–পাখি ইত্যাদি। প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা এবং মানুষের ধ্বংসলীলায় প্রাচীন বাংলার এসব ভাস্কর্য নিদর্শন পুরাকীর্তি চিরতরে হারিয়ে গেছে। যা আছে তার মধ্যে কিছু ভগ্ন মন্দির, সে সবে গড়া ভাস্কর্য, দেয়ালে ভাস্কর্যখচিত পোড়ামাটির ফলক বা টেরাকোটা শিল্প। স্থাপত্য ভাস্কর্য ইত্যাদি নিয়েই তৈরি হয়েছে বাংলার পূর্ব বর্ধমান জেলা। আর এই পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকায় শিল্প স্থাপত্য সম্পর্কে আলোচনায় সবার আগে যে নামটি উঠে আসে সেটি হল দক্ষিণ দামোদর এলাকা।

আর এই দক্ষিণ দামোদর এলাকার একটি শস্যশ্যামলা স্থাপত্য ভাস্কর্যে মোরা, গ্রাম হল রায়না। রায়না গ্রামে গেলে দেখা যাবে বেশ কয়েক জোড়ার শিব মন্দির। ওইসব জোড়া মন্দির গুলির গায়ে রয়েছে টেরাকোটার কাজ। প্রাচীন এই শিব মন্দির গুলির গায়ের টেরাকোটার কাজ বহুকাল ধরেই দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছে ঐতিহাসিকদের। ঐতিহাসিকদের একাংশের অনুমান, হয়তো অতীতে সৈব সম্প্রদায়ের মানুষজনের প্রাধান্য ছিল এই শস্য শ্যামলা রায়না গ্রামে। এছাড়াও , রায়না গ্রামে রয়েছে প্রাচীন বৌদ্ধস্তূপ । গ্রামবাসীদের দাবি, এই বৌদ্ধ স্তুপগুলিতে অব্রাহ্মণরা পূজা করেন। রায়না গ্রামে থাকা এই জোড়া শিব মন্দির, তার গায়ের টেরাকোটার নকশা এবং বৌদ্ধ স্তুপগুলি নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন এমনটাই দাবি করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পাশাপাশি, এই ঐতিহাসিক নিদর্শন গুলি সংরক্ষণ ও সেগুলিকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র তৈরীর দাবি তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই মন্দির এবং বৌদ্ধ স্তুপ সম্পর্কে গবেষণা করলে অনেক প্রাচীন ইতিহাস সামনে আসবে বলে গ্রামবাসীদের মতামত। এই বিষয়ে রায়নার বিধায়িকা তথা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাননীয়া শম্পা ধারা জানান,”রায়না বিধানসভা এলাকা, বরাবরই শিল্প ভাস্কর্যে এক অন্যতম নিদর্শন। এলাকা বাসীদের প্রস্তাব পেলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে ঊর্ধতম কর্তৃপক্ষকে জানাবেন এবং সমগ্র ভারতবাসীর কাছে এই ঐতিহ্য তুলে ধরার চেষ্টা করবেন”।

Leave a Reply