ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তরজা বন্ধ করতে পোস্টার বৃদ্ধ দম্পতির।

চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তরজা বন্ধ করতে পোস্টার বৃদ্ধ দম্পতির।
চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তরজা বন্ধ করতে পোস্টার বৃদ্ধ দম্পতির।

পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই নানা ধরনের রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। শুধু পার্টি অফিস বা টিভির পর্দায় নয় পাড়ার চায়ের দোকান গুলোতেও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।এমন উত্তেজনার আবহে নিজের চায়ের দোকানে রাজনীতি নিয়ে বৈঠকি আড্ডা হোক, সেটা একেবারেই না-পসন্দ বড়শুলের মণ্ডল দম্পতির।

রাজনৈতিক তরজা বন্ধ করতে দোকানের খদ্দেরদের আগাম সতর্ক করে পোস্টার সাঁটালেন তাঁরা। সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে, ‘অনুগ্রহপূর্বক এবং দয়া করিয়া আগত ব্যক্তিবর্গ দিগকে অনুরোধ করা হইতেছে, যে যেহেতু নির্বাচনী দিনক্ষণ চূড়ান্ত হইয়া গিয়াছে সেহেতু এই দোকানে বসিয়া ‘কোনওরূপ রাজনৈতিক’ আলোচনা করিবেন না।

‘বড়শুলের পুরাতন বাসস্ট্যাণ্ডে ‘জেঠুর চায়ের দোকান’ পরিচিত আড্ডার জায়গা। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এই দোকান চালিয়ে সংসারের হাল ধরে রেখেছেন সত্তরোর্ধ্ব দুর্জয় মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী ষাটোর্ধ্ব ভারতী মণ্ডল।বাড়িতে আছে একমাত্র প্রতিবন্ধী ছেলে। প্রতিদিন ভোরে এই চায়ের দোকান খুলে শুরু হয় তাঁদের রুটিরুজির লড়াই। চলে প্রায় রাত দশটা পর্যন্ত। এটাই বৃদ্ধ মণ্ডল দম্পতির রোজনামচা।

চায়ের দোকানে সকাল থেকে বিভিন্ন বয়সের খদ্দেররা তাঁদের দোকানে ভিড় করেন। তাঁদের চা খাওয়ার পাশাপাশি খেলা, রাজনীতি নিয়ে চলে জোর চর্চা। সারা তেণ্ডুলকর থেকে শুভময় গিল। আশীষ বিদ্যার্থী থেকে লক্ষ্মণ শেঠ- কিছুই বাদ যায় না সেখানে। চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দিয়ে মমতা থেকে মোদী নিয়ে চলে তর্কবির্তক। সেটা আবার কখনও কখনও হাতাহাতিতে পৌঁছায়। মূলত এই অশান্তি এড়াতেই নিজের দোকানে এমন পোস্টার সাঁটিয়েছেন বর্ধমানের এই বৃদ্ধ দম্পতি। ভারতী মণ্ডল বলেন, ‘গরীবের সংসার, দোকানের আয় থেকে কোনওরকমে চলে। দোকানে রাজনৈতিক আলোচনা থেকে অশান্তি ছড়াক, তা চাই না।’

এই পোস্টার ঘিরে বেশ যথেষ্ট আলোচনা শুরু হয়েছে বড়শুল বাজারে। তবে এমন পোস্টারের জন্য ‘জেঠুর চায়ের দোকানে’ খদ্দেরদের আসা কমেনি।’ কারণ এর আগে গত বিধানসভা ভোটেও দোকান বাঁচাতে একই ধরনের পোস্টার দোকানে সাঁটিয়ে ছিলেন মণ্ডল দম্পতি।

তবে খদ্দের থেকে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সকলেই ওই বৃদ্ধ দম্পতির পাশে দাঁড়িয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা সুবোধ রায় বলেন,’আমি প্রতিদিন সকালে জেঠুর চায়ের দোকানে চা খাই। সেখানে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।রাজনীতির আলোচনাও হয়।তাই ঠিকই করেছেন জেঠু।’

জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিত্‍ দাস। তিনি বলেন, ‘অনেক সময়ে চায়ের দোকানে রাজনৈতিক তরজা হয়। তাতে দোকানে ক্ষতি হতে পারে। তাই তিনি ঠিকই করেছেন।’এক কথা বলেছেন বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘যদিও ব্যাপারটা বেশ অন্যরকম।তবে এটা তার পছন্দ-অপছন্দের বিষয়।’

Leave a Reply