তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নবজোয়ার কর্মসূচীতে এসে বারবার বলছিলেন কেউ যদি নির্দল হয়ে দাঁড়ায় দল এবং ভাবে ভোট মিটে গেলে দলে যোগদেবো তাহলে সে ভুল ভাবছে,দল তাদের আর ফেরত নেবেনা। সেইমতো পঞ্চায়েত ভোটের লড়াই নিয়ে দলের কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। কর্মীদের সতর্ক করে নিয়ে তাঁর স্পষ্ট কথা, যে সব তৃণমূলকর্মী নির্দল হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন,তাদের বড় শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
এবারের পঞ্চায়েত ভোটে দলের কাছ থেকে টিকিট না মেলায় বহু তৃণমূল কর্মী দলীয় নির্দেশ অমান্য করে নির্দল হয়ে মনোনয়ন জমা করেছেন। আগামী দুদিনের মধ্যে প্রার্থীপদ প্রত্যাহার না করলে সেই সব কর্মীকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়ে দেন পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়।
আজ দুপুরে কাটোয়ার স্টেশন বাজারে দলীয় কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিনি। সেখানে তিনি জানান, জেলায় প্রায় দেড়শ জন তৃণমূল কর্মী আছেন, যারা দলের অনুমোদিত প্রার্থী হতে না পেরে পঞ্চায়েতের বিভিন্ন স্তরে নির্দল হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। জেলার ২৩ টি ব্লকে যে সব কর্মী ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছেন তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জেলায় কেতুগ্রাম এবং মঙ্গলকোটের অধিকাংশ গ্রামপঞ্চায়েত সহ দুটি পঞ্চায়েত সমিতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল কংগ্রেস দখল করেছে। সেখানে প্রার্থী দেওয়ার সময় কোনওভাবে বিরোধীদের ভয় দেখানো হয়েছিল কিনা এই বিষয়ে দলগত ভাবে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কারণ এবার অবাধ পঞ্চায়েত নির্বাচন করার কথা দলের উচ্চ নেতৃত্ব বার বার বলেছে।
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল দুষ্কৃতীরা তাদের প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে। রবিবার প্রায় তিরিশ জনের একটি বিশাল বাইক বাহিনী কাটোয়ার শ্রীখণ্ড গ্রামপঞ্চায়েতের চন্দ্রকোটা গ্রামে সিপিএম প্রার্থী মোজারুল সেখের বাড়ি গিয়ে মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুদিনের মধ্যে মনোনয়ন না তুললে প্রার্থীর বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও শাসানো হয়েছে।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘মনোনয়ন তুলতে হুমকি কেন দেওয়া হবে? হুমকি দিয়ে হয়ত দশজনকে প্রত্যাহার করা যাবে। মনোনয়নের সময় যখন হুমকি দেওয়া হয়নি, তখন এখন আর প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের জন্য কাউকে হুমকি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।’
