ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে আতা খান – জানুন আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন: আতা আমাদের সকলের পরিচিত সু-স্বাদু একটি ফল। আতা পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব বাজারে দেখা যায়। আতা শুধু সু-স্বাদু নয় আতা পুষ্টি গুণেও ভরপুর একটি ফল। আতার খোসা ছাড়িয়ে তার ভিতরের সাদা শাঁসটি বা কোষা খাওয়া হয় এবং দানা গুলি ফেলে দিতে হয়।

আতার বিজ্ঞানসম্মত নাম: Annona squamosa

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে আতা খান – জানুন আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

আতা হলো একটি ফাইবার যুক্ত ও পুষ্টিকর ফল। শুধুই ফাইবার নয় এতে প্রচুর পরিমানে মিনারেল, ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, প্রোটিন ইত্যাদি সুস্বাদু ও উপাদেয় ফল আতা পাকা অবস্থায় খাওয়া হয়। এছাড়াও সিরাপ, জ্যাম ও আইসক্রিম আতা থেকে তৈরি করা হয়। আতার অনেক ভেষজ গুণ আছে। আতা কতিপয় রােগ নিরাময়ের জন্য কাজ দেয়, যথা বমি, উদরাময়, মাথা ঝিমঝিম (Vertigo) প্রভৃতি।

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে আতা খান - জানুন আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে আতা খান – জানুন আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন-Benefits and nutritional value of Sugar apple:

১. আতার বিশেষ গুন: সুস্বাদু ও উপাদেয় ফল আতা পাকা অবস্থায় খাওয়া হয়। এছাড়াও সিরাপ, জ্যাম ও আইসক্রিম আতা থেকে তৈরি করা হয়। আতার অনেক ভেষজ গুণ আছে যা আমাদের শরীরের নানা রোগ সারাতে সাহায্য করে থাকে।

২. দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে: একটু বয়েস বেড়ে যাওয়ার কারণে আমাদের দৃষ্টি শক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এই সমস্যার থেকে রক্ষা পেতে আতা নিয়মিত সেবন করা প্রয়োজন। আতাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-এ রয়েছে। এই ভিটামিন-এ দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতে উপকারী ভূমিকা রয়েছে।

৩. চুল ও ত্বকের জন্য: আতা ত্বকের সাথে সাথে চুলের সমস্যাও দূর করে থাকে। আতাতে থাকা ভিটামিন রুক্ষ ও শুষ্ক ত্বককে ভিতর থেকে মসরাইস করে রুক্ষ ও শুস্কতা দূরকরে থাকে। সাথে সাথে আতাতে থাকা প্রোটিন চুলের গোড়া মজবুত করে ও চুল উঠা বা পাকার থেকে রক্ষা করে।

৪. রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা: আতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি, যা খুব ভালাে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক। আতাতে থাকা প্রচুর ভিটামিন-সি ( ৪৪.০০ মিলিগ্রাম) শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে যার ফলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস এর সংক্রমণ আমাদের শরীরকে কোনো রকম ক্ষতি করতে পারেনা।

৫. হজম প্রক্রিয়া: আতাতে রয়েছে কপার আর ডায়েটরি ফাইবার, যা হজম প্রক্রিয়াকে ভালাে রাখে এবং সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যাকে সমাধান করে থাকে। যাদের হজম প্রক্রিয়া কমে গেছে তাদের নিয়মিত আতা খাওয়ার প্রয়োজন।

৬. গর্ভবতী মহিলাদের জন্য: আতা গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। মহিলাদের গর্ভস্থয় সন্তানের মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্র, রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এই ফল। ভিটামিন বি ৬ থাকার কারণে বমি বমি ভাব এবং সকালের অসুস্থতার সংবেদন প্রতিরোধ করে। এতে থাকা পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

৭. অকাল প্রসব প্রতিরোধ: কপার বা তামা গর্ভবতী মহিলার জন্য প্রয়োজনীয়, কারণ তাদের ভ্রূণের সুরক্ষার জন্য কপারের ১০০ মিলি ডোজ প্রয়োজন। আতা এই তামার পরিমাণের একটি নির্দিষ্ট অংশ সরবরাহ করে। গর্ভপাতের ঝুঁকি হ্রাস করার পাশাপাশি এটি অকাল প্রসবের সম্ভাবনাও হ্রাস করে।

৮. ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে: এতে প্রচুর পরিমাণে পটাসিয়াম আর ম্যাগনেসিয়াম থাকার ফলে ব্লাডপ্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আতা সাহায্য করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা নিয়মিত আতা সেবন করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

৯. অ্যানিমিয়া সারাতে: আতায় রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন, যা আমাদের অ্যানিমিয়া রোগ সারাতে সাহায্য করে। শরীরে আয়রনের মাত্রা কমে গেলে আতা আয়রনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে।

১০. হৃদরােগের উপকারিতা: এই ফলে থাকা ম্যাগনেসিয়াম হৃদরােগের পক্ষে উপকারী। যে সমস্ত ব্যাক্তি হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়ম করে দিনে দু-বার আতা সেবন করলে হৃদরোগের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় এবং নতুন ভাবে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার হাত থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন: লিচুর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

১১. ওজন বাড়াতে: আতা আমাদের শারীরিক ও দৈহিক বিকাশে সাহায্য করে। আতায় রয়েছে প্রচুর ক্যালরি, যা ওজন বাড়াতে সহায়ক। যারা ওজন বাড়াতে চান বা যাদের শরীর হালকা তারা দিনে দু-বার আতা খেলে ধীরে ধীরে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।

১২. কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে: নিয়াসিন ও ডায়েটরি ফাইবার থাকার ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে আতা।

১৩. অ্যাজমা প্রতিরোধ: অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে আতার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আতায় থাকা ভিটামিন-বি-সিক্স, যা ফুসফুসের সমস্যায় উপকারী। অ্যাজমা প্রতিরোধ করতে সহায়ক।

১৪. অন্ত্র কৃমিমুক্ত: আতা পাতার নির্যাস অন্ত্র কৃমিমুক্ত করার কাজ করে।

১৫. দাঁতের ব্যথা: আতা গাছের মুল দাঁতের ব্যথা উপশমে ভালাে কাজ দেয় এবং এটি জ্বরনাশক ওষুধ। আতা গাছের মূল ভালো করে ধুয়ে নিন তারপর তার সাথে অল্প দুটি গোলমরিচ দিয়ে বেটে নিন এবং দাঁতের গড়াতে লাগান আর জ্বর হলে এর সাথে একটু অদা ও মধু দিয়ে ফেটে খাইয়ে দিন।

১৬. নানা রোগে আতা: আতা কতিপয় রােগ নিরাময়ের জন্য কাজ দেয়, যথা—বমি, উদরাময়, মাথা ঝিমঝিম (Vertigo) প্রভৃতি।

আতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন:

প্রতি ১০০ গ্রাম আতাতে আছে-

  • কার্বোহাইড্রেট – ২৩.৭১ গ্রাম
  • সােডিয়াম – ১৪.০ মিলিগ্রাম
  • প্রোটিন – ৪.৩০ গ্রাম
  • কপার – ২.৪০ মিলিগ্রাম
  • ফ্যাট – ৩০ গ্রাম
  • লােহা – ০.৭০ মিলিগ্রাম
  • শর্করা – ১৪.০০ গ্রাম
  • দস্তা – ২.৫০ মিলিগ্রাম
  • জল – ৭৩.৬ গ্রাম
  • ভিটামিন-বি ৩ – ০.৮০ মিলিগ্রাম
  • খাদ্য আঁশ – ৩.২০ গ্রাম
  • ভিটামিন-বি ৫ – ০.৫০ মিলিগ্রাম
  • ক্যালসিয়াম – ২২.০০ মিলিগ্রাম
  • ভিটামিন-সি – ৪৪.০০ মিলিগ্রাম
  • ম্যাগনেসিয়াম – ৭৫.০ মিলিগ্রাম
  • তাপশক্তি – ৯৬ কিলাে ক্যালােরি

Leave a Reply