[ad_1]
পার্থ দাস : নামেও জগন্নাথ, কাজেও জগন্নাথ। বীরভূমের সিউড়ি ১ নম্বর ব্লকের অন্তর্গত হাটজান বাজার এলাকার জগন্নাথ মাহারা। যে জগন্নাথের জন্ম থেকেই দুটি হাত নেই। তবে দুটি হাত না থাকলেও কোনদিন তাকে থেমে থাকতে দেখা যায়নি। সমস্ত প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে আজ জগন্নাথ দুঃস্থ দরিদ্র পড়ুয়াদের কাছে সফল শিক্ষক।
জগন্নাথ মাহারার দুটি হাত না থাকলেও সে পড়াশুনোর প্রতি অদম্য ইচ্ছায় বীরভূম জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন। পারিবারিক অবস্থা একেবারেই খারাপ হওয়ার কারণে বিভিন্ন জনের থেকে সাহায্য নিয়ে তাকে পড়াশোনা চালাতে হয়েছে। এখন এই জগন্নাথই প্রাথমিকের শিক্ষকতার সুযোগ পেতে ট্রেনিং নিচ্ছেন।
জগন্নাথের দুটি হাত না থাকলেও পায়ে করেই সে সমস্ত কাজ করতে পারেন এবং সমস্ত কাজ নিজেই করেন। কুয়ো থেকে জল তোলা থেকে শুরু করে স্নান খাওয়া দাওয়া সবকিছুই তার পায়ের কামালে হয়ে থাকে। তবে এই জগন্নাথ একেবারে নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসার পর তার মধ্যেও এখন এইরকম পড়ুয়াদের সাহায্য করার ইচ্ছা জন্মায়।
সেখান থেকেই জগন্নাথ নিজেদের এলাকায় একটি অবৈতনিক প্রাইভেট স্কুল খোলেন। প্রথমদিকে এই স্কুলটিতে মাত্র ৫-৬ জন পড়ুয়া এবং একটি গাছের তলায় হলেও এখন এই স্কুলের ছাত্র সংখ্যা প্রায় ৯০। পাশাপাশি পড়ুয়া এবং শিক্ষকের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে এলাকার এক সহৃদয় ব্যক্তি তার একটি রুম দিয়েছেন পড়ানোর জন্য।
সেখানেই জগন্নাথ মাহারাকে পড়ুয়াদের পড়াতে দেখা যায়। অন্যান্য আর পাঁচটা শিক্ষক-শিক্ষিকার মত তিনিও চক ডাস্টার নিয়ে পড়ুয়াদের পড়ান। তবে তার যেহেতু হাত নেই তাই পায়ে করেই তিনি চোখ ডাস্টার ধরেন এবং দিব্যি আর পাঁচটা সাধারণ শিক্ষকের মত পড়ুয়াদের বিদ্যা দান করে আসছেন।
[ad_2]