ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

শব্দ বাজি ও আতস বাজি বন্ধে দাওয়াই হাইকোর্টের

The High Court Has Stopped The Use Of Noise And Fireworks
শব্দ বাজি ও আতস বাজি বন্ধে দাওয়াই হাইকোর্টের

বেঙ্গলি পোর্টাল: শব্দবাজি বন্ধে পথিকৃৎ ছিল পশ্চিমবঙ্গও।তবে এখনও বঙ্গে বাজির শব্দমাত্রা গোটা দেশের নির্ধারিত মাত্রার থেকে কম। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার আতসবাজি বন্ধে কতটা সক্রিয় সেই প্রশ্ন তুলছেন পরিবেশ কর্মীগণ।

ঘটনাচক্রে, সোমবার ৭ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আতসবাজি বন্ধের বিষয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, রাজস্থান সরকারকে নোটিস পাঠিয়ে বক্তব্য জানতে চেয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালতের প্রধান বেঞ্চ। এ দিনই রাজস্থান সরকার রাজ্যে আতসবাজি বিক্রি বন্ধ করেছে। কিন্তু এ রাজ্যে বাজি বন্ধ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি নবান্ন।

প্রতিদিনের তাজা খবর পেতে ফেসবুক পেজ ও টেলিগ্রামে যুক্ত হন:

পরিবেশ দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, এ ব্যাপারে আদালত কিছু নির্দেশ দেয় কি না, সে দিকেই তাঁরা তাকিয়ে আছেন। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে বাজি সংক্রান্ত একটি মামলা উঠতে পারে। সেই জল কোন দিকে গড়ায় তার উপরে নির্ভর করেই ৬ নভেম্বর নাগাদ সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। যদিও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন মুখ্য আইন অফিসার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “পরিবেশ আইন, বায়ু দূষণ আইন ও বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের বলে রাজ্যের বাজি নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশের আলাদা ভূমিকা নেই।”

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরেই খুলতে পারে রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজ, আপাতত মানতে হবে এই সমস্ত নিয়ম

তাহলে কি রাজ্য সরকারের কোনো রকম সদিচ্ছা নেই? পরিবেশকর্মীদের যৌথ সংগঠন সবুজ মঞ্চের সম্পাদক নব দত্ত বলছেন, “সরকার ইচ্ছে করলেই পারে। কিন্তু গত বছরেও সুপ্রিম কোর্ট বাজি পোড়ানোর সময় বেঁধে দিয়েছিল। এ রাজ্যে সেই নির্দেশ লঙ্ঘন করায় মামলা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কারও কিছু হয়নি।” অনেকেই অবশ্য বলছেন, এই ধরনের বিধিনিষেধের ক্ষেত্রে শাসক দলের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা থাকে। যদিও বিশ্বজিৎবাবু বলছেন, “করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন হল, ট্রেন বন্ধ হল, স্কুল-কলেজ বন্ধ হল। মানুষ সে সব মেনে নিলে বাজি বন্ধ তো তুচ্ছ ব্যাপার।” প্রসঙ্গত, বেআইনি বাজি বন্ধে মার্চ মাস থেকে এ পর্যন্ত দু’বার সরকারকে চিঠি দিলেও কোনও কাজ হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: রাজ্যে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু হওয়ার পথে: কিন্তু কবে চালু হচ্ছে?

তবে দু-এক জন মাঝারি মাপের বাজি ব্যবসায়ী বাদ দিলে শহরের বড় মাপের বাজি ব্যবসায়ীরাও বাজি বন্ধ নিয়ে আপত্তি করছেন না। বাজি বাজারও বন্ধ থাকছে না। যদিও বাজি বাজার বন্ধ করে লাভ হবে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।

পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুঙ্গি এবং উত্তর ২৪ পরগনার নীলগঞ্জ রোডের নারায়ণপুরে বাজির বাজার বসেছে। নৈহাটি, ডানকুনি বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন জায়গা থেকে বাজি শহরতলি বা জেলার ছোট ছোট অস্থায়ী দোকানে চলে গিয়েছে। পসরা সাজিয়ে বসেও পড়েছেন দোকানদারেরা। তাই সার্বিক ভাবে নিষিদ্ধ না-করলে বাজি বন্ধ হবে না বলেই মনে করেন পরিবেশকর্মীরা।

বাজির বিপদ কোথায় তা বোঝাতে গিয়ে বোস ইনস্টিটিউটের পরিবেশ বিজ্ঞানী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, এখন রাতের তাপমাত্রা কমছে, কুয়াশা জমছে। এ সময়ে বাজির ধোঁয়া থেকে নির্গত পোড়া ভারী ধাতুর কণা সেই কুয়াশায় মিশে ধোঁয়াশা তৈরি করবে। ওই বিষাক্ত ধোঁয়া কোভিড আক্রান্ত মানুষের দুর্বল শ্বাসতন্ত্রেও মারণ থাবা বসাতে পারে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। হাইকোর্টের কড়া দাওয়াইয়ে পুজোয় বিপদ এড়াতে পেরেছে রাজ্য। এ বার কি বাজির হাত থেকে বাঁচতেও কি ন্যায়ালয়ই ভরসা হবে?

Leave a Reply