সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে শসা খান – জানুন শসার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন: শসা আমাদের সকলের একটি প্রিয় সবজি। শসা কাঁচা এবং রান্না করে খাওয়া যায়। শসাকে আমরা নানা কাজে ব্যবহার করে থাকি যেমন, পূজা অর্চনাতে, মসলা মুড়িতে, কাঁচা খাওয়া, রান্না করা ইত্যাদি। শসা ভারতের সর্বত্র পাওয়া যায়।
শসার বিজ্ঞানসম্মত নাম: Cucumis sativus
সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে শসা খান – জানুন শসার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
শসায় ৯৫ শতাংশ জল থাকায় বডি হাইড্রেটেড রাখতে অত্যন্ত উপকারী। খুব কম খাবারই শসার মতো শীতল। এই লো-ক্যালোরি ভিজিতে হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্য এবং মূল্যবান পুষ্টি সহ অনেক পুষ্টিকর সুবিধা রয়েছে শসাতে।
আরও পড়ুন: লাউ এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
শসাতে প্রচুর পরিমানে, কার্বোহাইড্রেট, প্রােটিন, ভিটামিন সি, ম্যাগনেসিয়াম, কপার, সােডিয়াম, ফ্যাট ইত্যাদি পাওয়া যায়।
শসার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন:
১. মস্তিষ্ক ও দেহের জন্য: কাঁচা শসা লবণ মিশিয়ে খাওয়া হয় বা স্যালাড করেও খাওয়া হয়। পরিণত শসা রান্না করে খাওয়া হয়। বীজের তেল মস্তিষ্ক ও দেহের জন্য উপকারী।
২. জলের অভাব মেটাতে: শসায় ৯৫ শতাংশ জল থাকায় বডি হাইড্রেটেড রাখতে অত্যন্ত উপকারী। দেহে জলের অভাব মেটাতেও শশা কার্যকরী।
৩. রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা: প্রচুর পরিমাণে বি গ্রুপ ভিটামিন শসায় রয়েছে, যা দেহে রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়ায়। স্ট্রেস লেভেল ও আংজাইটি কমাতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: কুমড়োর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
৪. বুকজ্বালাতে শসা: বুকজ্বালাতে শসা যেমন উপকারী, আবার রােদে পােড়া ত্বক বা চুলকানিতে উপকারী।
৫. ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে: শসায় প্রচুর পরিমাণে জল থাকায় দেহ থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে।
৬. কনস্টিপেশনের সমস্যায়: ক্রনিক কনস্টিপেশনের সমস্যায় নিয়মিত শসা খেলে ভাল উপকার পাওয়া যায়।
৭. চোখের পক্ষে: চোখের ফোলাভাব বা আইব্যাগস কমাতে শসা অত্যন্ত কার্যকরী, একদম চিল্ড শসার দুটো টুকরাে যদি চোখের ওপর রেখে একটু বিশ্রাম নেওয়া যায়, তাতে স্বস্তি মেলে। শসায় থাকে ভিটামিন-এ, যা চোখের পক্ষে উপকারী।
৮. চুল গজাতে: শসায় থাকা সিলিকন ও সালফার চুল গজাতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে শসা সাহায্য করে। এর পাশাপাশি হজমেও খুব সাহায্য করে।
১০. ব্যাকটেরিয়া রােধ: শসা মুখের ভিতরে ব্যাকটেরিয়া রােধ করতে সহায়ক ও মুখের দুর্গন্ধ কমায়।
১১. ব্লাড প্রেসার: নিয়মিত শসা খাওয়ার ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে শসা।
১২. ক্যানসার প্রতিরােধে: শসায় রয়েছে ল্যারিকিরেসিনল, পিননারেসিনল ও সেকোই। সােলারিসিরেসিনােল নামক উপাদান, যা বিভিন্ন ধরণের ক্যানসার প্রতিরােধে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: পালংশাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
১৩. ইউরিক অ্যাসিড: শসা খেলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
১৪. রােগ প্রতিরােধ: শসার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট প্রপার্টি শরীরের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
১৫. কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে: শসাতে থাকা স্টেরল শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার সহায়ক হয়।
১৬. গাঁটের ব্যথা: হাঁটু বা গাঁটের ব্যথা প্রতিরােধ করে শসা।
১৭. গ্লুকোজের মাত্রা: ডায়াবেটিক রােগীদের জন্য উপকারী শসা। শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে শসা।
১৮. ওজন কমাতে: শসায় থাকা সিলিকন ও সালফার থাকার কারনে ওজন কমাতে শসা সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ভাত খাওয়ার পর একটা শসা খেলে হজমেও খুব সাহায্য করে।
শসার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন – Benefits And Nutritional Value Of Cucumber:
প্রতি ১০০ গ্রাম শসায় আছে-
- কার্বোহাইড্রেট – ২.৫ গ্রাম
- প্রােটিন – ০.৪ গ্রাম
- ফ্যাট – ০.১ গ্রাম
- জল – ৯৫. গ্রাম
- খনিজ উপাদান – ০.৩ গ্রাম
- খাদ্য আঁশ – ০.৪ গ্রাম
- ক্যালসিয়াম – ১০.০ মিলি গ্রাম
- পটাসিয়াম – ৫০.০ মিলি গ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম – ১১.০ মিলি গ্রাম
- সােডিয়াম – ১০.২ মিলি গ্রাম
- ফসফরাস – ২৫.০ মিলি গ্রাম
- কপার – ০.১ মিলি গ্রাম
- সালফার – ১৭.০ মিলি গ্রাম
- ক্লোরিন – ১৫.০ মিলি গ্রাম
- লােহা – ১.৫ মিলি গ্রাম
- অক্সালিক অ্যাসিড – ১৫.০ মিলি গ্রাম
- ভিটামিন-বি-৫ – ০.২০ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন-সি – ৭.০০ মিলিগ্রাম
- তাপশক্তি – ১৩ কিলাে ক্যালােরি
[সতর্কতা: শসা খাওয়ার অব্যবহিত পরে জল পান অনুচিত। এটি করলে বদ-হজম (Indigestion) হয়।]