ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে তেলাকুচা খান – জানুন তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন: তেলাকুচা ভারতবর্ষের প্রায় সব অঞ্চলে বসত বাড়ির আশে পাশে, রাস্তার পাশে বন-জঙ্গলে জন্মায়। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র দেখা পাওয়া যায়। সাধারণত চৈত্র বৈশাখ মাসে তেলাকুচা রোপন বা চাষ হয়। তেলাকুচা একটি লতানো উদ্ভিদ। এটি গাঢ় সবুজ রঙের নরম পাতা ও কাণ্ডবিশিষ্ট একটি লতাজাতীয় বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ।

তেলাকুচার বিজ্ঞানসম্মত নাম: Coccinia grandis

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে তেলাকুচা খান – জানুন তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

এর ফল পাকলে লাল রঙ এর হয়ে থাকে। এই ফল পাকা ও কাঁচা রান্না করে খাওয়া হয়। তেলাকুচা গাছের লতার কাণ্ড থেকে আকর্ষ বের হয় তার সাহায্যে অন্য গাছকে জড়িয়ে উপরে উঠে যায়। পাতা ও লতার রং সবুজ। মানুষের কাছে অবহেলিত এ লতা জাতীয় গাছটি অত্যন্ত উপকারী। কবিরাজী চিকিৎসায় তেলাকুচা বেশ কিছু রোগে ব্যবহৃত হয়। আসুন জেনেনি এর ঔষধি গুণাগুণ ও উপকারিতা সমূহ।

আরও পড়ুন: আম এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে তেলাকুচা খান - জানুন তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে তেলাকুচা খান – জানুন তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন – Benefits And Nutritional Value Of Ivy Gourd:

১. নানা গুন: তেতাে তেলাকুচা মল নিঃসরণ করায়, অরুচি নাশ করে, শ্বাসের কষ্ট, কাশি ও জ্বর সারিয়ে তােলে, বমিভাব দূর করে। স্বাদে তেতাে হওয়ার জন্যে খিদে বাড়িয়ে দেয়।

২. জন্ডিস রোগে: জন্ডিস হলে তেলাকুচার মূল বেটে রস তৈরি করে প্রতিদিন সকালে আধাকাপ পরিমাণ খেতে হবে। জন্ডিস রোগে উপশম পাবে।

৩. পা ফোলা রোগে: গাড়িতে ভ্রমণের সময় বা অনেকক্ষণ পা ঝুলিয়ে বসে থাকলে পা ফুলে যায় একে শোথ রোগ বলা হয়। তেলাকুচার মূল ও পাতা এক সাথে বেটে এর রস ৩/৪ চা চামচ প্রতিদিন সকালে ও বিকালে খেতে হবে পা ফোলা কমে যাবে তাড়াতাড়ি।

আরও পড়ুন: আঙুর এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

৪. শ্বাসকষ্ট রোগে: বুকে সর্দি বা কাশি বসে যাওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট (হাপানি রোগর জন্য নয়) হলে তেলাকচুর মূল ও পাতার রস হালকা গরম করে ৩/৪ চা চামচ পরিমাণ ৩ থেকে ৭ দিন প্রতিদিন সকালে ও বিকালে খেতে হবে শ্বাসকষ্ঠে আরাম পাবেন।

৫. স্তনে দুধ স্বল্পতায়: যে সমস্ত মায়েদের সন্তান প্রসবের পর অনেকের স্তনে দুধ আসে না বা শরীর ফ্যাকাশে হয়ে যায়। এমতো অবস্থা দেখা দিলে ১টা করে তেলাকুচা ফলের রস হালকা গরম করে মধুর সাথে মিশিয়ে খেতে হবে। তেলাকুচার পাতা একটু তিতো হওয়ায় পরিমাণমত সকাল-বিকাল ১ সপ্তাহ খেতে হবে ২ করে পাতা।

৬. শ্লেম্মাজ্বর রোগে: শ্লেষ্মাজ্বর হলে ৩/৪ চা চামচ তেলাকুচার মূলও পাতার রস এক সাথে হালকা গরম করে ২/৩ দিন সকাল বিকাল খেতে হবে। এ ক্ষেত্রে তেলাকুচার পাতা কোনো কাঁসার পাত্রে বেটে রস করতে হবে।

৭. কাশি হলে: কাশি বা শ্লেস্মাকাশি হলে শ্লেস্মা তরল করতে এবং কাশি উপশমে ৩/৪ চা চামচ তেলাকুচার মূল ও পাতার রস হালকা গরম করে আধা চা-চামচ মধু মিশিয়ে ৩ থেকে ৭ দিন প্রতিদিন সকালে ও বিকালে খেতে হবে। এতে কাশি ও শ্লেমাকাশির হাত থেকে রক্ষা পাবে।

৮. ফোঁড়া ও ব্রণ হলে: ফোঁড়া বা ব্রণ হলে এ সমস্যায় তেলাকুচা পাতার রস বা পাতা বেটে (থেতে) ফোঁড়া ও ব্রণে প্রতিদিন সকাল-বিকাল ব্যবহার করতে হবে।এ র ফলে উঠতি ফোঁড়া বসে যাবে ও ব্রণ মিলিয়ে যাবে।

৯. আমাশয় হলে: শিশু (৩/৫ বছর ) বা তার বেশি বয়স্কদের প্রায়ই আমাশয় হতে থাকলে তেলাকুচার মূল ও পাতার রস ৩/৪ চা চামচ করে একসপ্তাহ প্রতিদিন সকালে ও বিকালে খেতে হবে। এর ফলে কঠিন আমাশয় ছাড়তে বাধ্য হবে।

১০. অরুচিতে: জ্বরে বা সর্দিতে মুখে অরুচি হলে তেলাকচুর পাতা একটু সিদ্ধ করে জলটা ফেলে দিয়ে ঘি বা সর্ষের তেল দিয়ে শাকের মত রান্না করতে হবে। খেতে বসে প্রথমেই ওই শাক খেলে খাওয়াতে রুচি ফিরে আসবে।

আরও পড়ুন: পেয়ারার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

১১. ডায়াবেটিস রোগে: ডায়াবেটিস হলে তেলাকুচার কান্ড সমেত পাতা বেটে রস তৈরি করে আধাকাপ পরিমাণ প্রতিদিন সকাল ও বিকালে খেতে হবে ৩/৪ চামচ। তেলাকুচার পাতা রান্না করে খেলেও ডায়াবেটিস রোগে উপকার হয়। ডায়বেটিস রােগের পক্ষে তেলাকুচার পাতা অত্যন্ত উপকারী ও হিতকর। প্রতিদিন নিয়ম করে শুকনাে পাতা চূর্ণ বা টাটকা রস খেলে উপকার পাওয়া যাবেই।

১২. কীটপতঙ্গের কামড়ে: বিছে বা কীটপতঙ্গ কামড়ালে তেতাে তেলাকুচা পাতা বেটে প্রলেপ দিলে জ্বালা বন্ধ হয়।

১৩. কোনাে কারণে জ্বিভ যদি ফেটে যায় তাহলে তেলাকুচা চিবিয়ে সেই রস মুখে রাখলে উপকার হয়।

বৈজ্ঞানিক মতে: তেলাকুচার প্রভাব জননেন্দ্রিয় ও মূত্রাশয়ের ওপর বেশি। শরীর স্নিগ্ধ করে, মূত্র ও রক্তের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এই শ্রেণীর অন্য তরকারির মধ্যে তেলাকুচার পুষ্টিমূল্য বেশি। তেলাকুচা ফলে আছে, মাস্ট সেল স্টেবিলাইজিং, এনাফাইলেকটিক-রোধী এবং এন্টিহিস্টামিন, জাতীয় উপাদান। কবিরাজী চিকিৎসায় তেলাকুচা বেশ কিছু রোগে ব্যবহৃত হয়, যেমন- কুষ্ঠ, জ্বর, ডায়াবেটিস, শোথ (edema), হাঁপানি, ব্রংকাইটিস ও জন্ডিস ইত্যাদি ।

আরও পড়ুন: আপেল এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

Leave a Reply