ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে শুষনি শাক খান – জানুন শুষনি শাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

শুষনি শাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
শুষনি শাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

শুষনি শাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন: আমাদের চারপাশের প্রকৃতিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বহু গাছ, লতাপাতা, গুল্ম জাতীয় নানা গাছ পালা। যে গুলোর ওষুধী ব্যবহার আমাদের অজানা রয়ে গেছে। এমন একটি উপাদান হচ্ছে শুষনি শাক। শুষনি শাক পশ্চিমবঙ্গের আনাচে কানাচে, পুকুরের চারপাশে, বাগানে হয়ে থাকে। শুষনি শাক তার গুনের জন্য পরিচিত। পশ্চিমবঙ্গের গরিব পরিবারের খিদের চাহিদা মেটাতে এই শাকের ব্যবহার হয় এবং খিদের সাথে সাথে মানুষের পুষ্টির অভাব মিটিয়ে থাকে।

শুষনি শাক এর বিজ্ঞানসম্মত নাম: Marsilia minuta

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে শুষনি শাক খান - জানুন শুষনি শাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে শুষনি শাক খান – জানুন শুষনি শাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

সুস্থ ও রোগ মুক্ত থাকতে শুষনি শাক খান – জানুন শুষনি শাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

আমরা অনেকেই এই শাক কে চিনি জানি কিন্তু কি কি কাজে লাগে তা সবার জানানেই। এটি একটি সবুজ শাক ও ভিটামিন যুক্ত। গ্রামীণ পর্যায়ে এই শাক মূলত নারী ও শিশুরাই সংগ্রহ করে থাকে। গ্রামের দরিদ্র মানুষের জন্য এই শাক যেমন পরিবারের খাদ্য চাহিদা মেটায় একইভাবে তা পুষ্টি চাহিদাও দূর করে।

আরও পড়ুন: পুদিনা পাতার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

শুষনি শাকটি আকারে মাটি থেকে প্রায় দুই ইঞ্চি হয়ে থাকে। শুশনি জলা ও স্যাতস্যাতে জায়গার মধ্যে জন্মায়। শাকটির আগাতে চারটি পাতা থাকে যা আকারে গোলাকৃতির হয়, তবে প্রত্যেকটি পাতা পরস্পর বিচ্ছন্ন ও পাতার মাঝে খাজ কাটা থাকে। পাতার রং সবুজ ও শাকটি খুবই নরম প্রকৃতির। স্থানীয় মানুষের মতে এই শাক একটু মিষ্টি স্বাদের। তবে আয়ুর্বেদ মতে এই শাক নানা রোগের একটি মহাঔষধি। এটি একটি অপুষ্পক ফার্ণ জাতীয় উদ্ভিদ। শুষনি শাক তোলার পর তাজা শাক ভাল করে জল দিয়ে ধুয়ে নিন। এই শাক অন্যান্য শাকের মত তেল, মরিচ, পেয়াজ, লবন দিয়ে ভেজে খাওয়া যায়।

শুষনি শাক এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন – Benefits And Nutritional Value Of Susni Shak:

১. শুশনি জলা ও সাঁৎস্যাতে জায়গায় জন্মায়। আমরা সবাই তুলে এনে শাক হিসাবে খাই।

২. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে: শুষনি শাক খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ১০-১৫ গ্রাম পাতা ভাল করে বেটে একটু চিনি বা মিছরি মিশিয়ে সরবত করে খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস বা অম্লরােগ থাকলে চিনি বা মিছরি না মিশিয়ে খেতে হবে। শাক শুকনা হলে ৩-৪ গ্রাম গুঁড়া ৩-৪ কাপ জলে মিশিয়ে সেদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে চিনি মিশিয়ে খেতে হবে।

৩. মেধাশক্তি বৃদ্ধিতে: ছাত্র ছাত্রীরা বারবার একটি বিষয় পড়েও মনে না রাখতে পারলে। আমরা বলি মাথায় কিছু নেই বা তোর মাথায় গোবর আছে। এদের জন্য শুষনি শাকের শুকনাে গুঁড়া ১ গ্রাম আন্দাজ মতো আধা কাপ দুধে একটু চিনি মিশিয়ে ৩-৪ মাস নিয়মিত খাওয়ালে উপকার পাবেন। তবে পূর্ণবয়স্কদের ক্ষেত্রে মাত্রা ২ গ্রাম করতে হবে। একটু বয়স হয়ে গেলে অনেকেই বলেন যে, বয়স হয়ে গেছে, সব কিছু মনে রাখতে পারছি না। এমনও হয় যে, বিশেষ পরিচিত বা আত্মীয়ের নাম হঠাৎ করে মনে করতে চাইছেন কিন্তু পারছেন না। এমতো অবস্থায় শুষনি শাকের রস ঘি এর সাথে মিক্স করে হালকা গরম করে প্রতিদিন ২-১ চা চামচ করে কিছুদিন খেলে ধীরে ধীরে ঐ অসুবিধাটা চলে যাবে।

আরও পড়ুন: কাঁঠাল এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

৪. প্রস্রাবে জ্বালা: প্রস্রাবে জ্বালা ও তার সঙ্গে কিছু ক্ষরণ হলে শুশনি শাকের রস খেলে উপকার পাওয়া যায়।

৫. হাঁপানি রােগ: শুষনি শাক খেলে হাঁপানি রােগ সারে। শুশনি শাকের রস ৪-৫ চামচ একটু গরম করে খেলে শ্বাসকষ্টের লাঘব হয় ও রাতে ঘুম ভালাে হয়।

৬. সর্দি ও শ্বাসনালীর প্রদাহ: শুষনি শাকের রস আদা সহ খেলে সর্দি ও শ্বাসনালীর প্রদাহ সারে।

৭. বিষাক্ত কীটের দংশনে: বিষাক্ত কীটের দংশনে বা হুলের বিষুনিতে, যেমন- বােলতা, মৌমাছি, ভীমরুল প্রভৃতি কীটের দংশনে শুষনি পাতার রস বা শাক বেটে ঐ স্থানে প্রলেপ দিলে জ্বালা-যন্ত্রণা কমে।

৮. কোষ্ঠকাঠিন্য: শুষনি শাক হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। শরীরকে ঠাণ্ডা রাখে।

৯. কোলেস্টেরল মাত্রা নিয়ন্ত্রণ: শুষনি শাক কোলেস্টেরল মাত্রা ও ট্রাই-গ্লাইকোসাইড নিয়ন্ত্রণ করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

১০. জণ্ডিস ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: শুষনি শাক জণ্ডিস আর যকৃতের সমস্যায় উপকার দেয়। এই শাক খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।

আরও পড়ুন: তেলাকুচার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

Susni Shak
Susni Shak

১১. রােগ প্রতিরােধ: শুষনি শাকে প্রচুর নিউট্রিয়েন্টস থাকে, শরীরে রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

১২. ত্বকের সমস্যায়: শুষনি শাক বয়সজনিত ত্বকের সমস্যায় অত্যন্ত উপকারী এই শাক।

১৩. চুল পড়ার সমস্যা: শুষনি শাক খেলে চুল পড়ার সমস্যা কমে, চুলের কোয়ালিটি আর টেক্সচার ভাল করে।

১৪. নানা রোগে: শুষনি শাক স্কিন ক্যানসার, অ্যাকনে, একজিমা, সােরিয়াসিস প্রতিরােধ করতে সাহায্য করে।

১৫. অনিদ্রা রােগ ও টেনসন মুক্ত: অত্যধিক দুশ্চিন্তার কারণে অনেকের ঘুম হয় না তন্দ্রা তন্দ্রা ভাব হলেও গভীর ঘুমের অভাব ও দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে কাঁচা ১৫ গ্রাম শুষনি শাক বেটে অথবা শুকনা ৩-৪ গ্রাম শুষনি শাকের গুঁড়া ৩/৪ কাপ জলে সেদ্ধ করে ১ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে নিন ২-৩ চা চামচ দুধ মিশিয়ে প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা কিছুদিন খেলে অনিদ্রা রােগ ও টেনসনমুক্ত হওয়া যায়।

১৬. শরীরের জ্বালা: আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে স্নায়বিক বৈকল্যে অনেকের সারা শরীরে দাহের বা রোদে কাজ-কর্মের ফলে শরীর গরম হয়। এক্ষের্তে শুষনি শাক বেটে স্নানের আগে সারা শরীরে মেখে তার আধা ঘণ্টা পরে স্নান করে ফেলুন শরীরের জ্বালাটা কমে যাবে।

১৭. শুষনি শাকে রয়েছে ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি ১, ভিটামিন-বি ১২, ভিটামিন-এ , ভিটামিন-সি ও তাপশক্তি (১৯ কিলাে ক্যালরি) থাকে।

আরও পড়ুন: আম এর উপকারিতা ও পুষ্টি গুন

Leave a Reply