ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

গণেশ ঘোষ জীবনী – Ganesh Ghosh Biography in Bengali

Ganesh Ghosh Biography in Bengali
Ganesh Ghosh Biography in Bengali

গণেশ ঘোষজীবনী: Bengaliportal.com আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Ganesh Ghosh Biography in Bengali. আপনারা যারা গণেশ ঘোষ সম্পর্কে জানতে আগ্রহী গণেশ ঘোষ এর জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

গণেশ ঘোষ কে ছিলেন? Who is Ganesh Ghosh?

গণেশ ঘোষ (২২ জুন, ১৯০০ – ২২ ডিসেম্বর, ১৯৯২) ছিলেন একজন বাঙালি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী, বিপ্লবী ও রাজনীতিবিদ। তিনি চট্টগ্রাম যুগান্তর দলের সদস্য হয়েছিলেন। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল সূর্য সেন ও অন্যান্য বিপ্লবীদের সঙ্গে তিনি চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে অংশ নেন।

গণেশ ঘোষ জীবনী – Ganesh Ghosh Biography in Bengali

নামগণেশ ঘোষ
জন্ম22 জুন 1900
পিতাবিপিনবিহারী ঘোষ
মাতা
জন্মস্থানবিনোদপুর, যশোর, ব্রিটিশ ভারত, (বর্তমান বাংলাদেশ)
জাতীয়তাব্রিটিশ ভারতীয়
পেশাবিপ্লবী, রাজনীতিবিদ
মৃত্যু16 অক্টোবর 1994 (বয়স 94)

bengaliportal

 

গণেশ ঘোষ এর জন্ম: Ganesh Ghosh’s Birthday

গণেশ ঘোষ 22 জুন 1900 জন্মগ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন: লর্ড জর্জ গর্ডন বায়রন জীবনী

আরও পড়ুন: অস্কার ওয়াইল্ড জীবনী

আরও পড়ুন: সত্যেন্দ্রনাথ বসু জীবনী

আরও পড়ুন: প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ জীবনী

আরও পড়ুন: মেঘনাদ সাহা ‘র জীবনী

গণেশ ঘোষ এর পিতামাতা ও জন্মস্থান: Ganesh Ghosh’s Parents And Birth Place

চট্টগ্রাম যুব বিদ্রোহের ফিল্ড মার্শাল বিপ্লবী গণেশ ঘোষের জন্ম ১৯০০ খ্রিঃ ২২ শে জুন পিতার কর্মস্থল চট্টগ্রামে। তাদের আদি নিবাস ছিল যশোহর জেলার বিনোদপুর। তাঁর পিতা বিপিন বিহারী ঘোষ ছিলেন রেলকর্মচারী।

গণেশ ঘোষ এর শিক্ষাজীবন: Ganesh Ghosh’s Educational Life

চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলে পড়বার সময়েই বন্ধু অনন্ত সিং – এর মাধ্যমে মাষ্টারদা সূর্য সেনের সংস্পর্শে আসেন। সূর্য সেন সেই সময়ে উমাতারা উচ্চ ইংরাজি বিদ্যালয়ের অঙ্কের শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি স্কুলের ছেলেদের নিয়ে সমাজ সেবার কাজে ব্রতী হয়েছেন। তাঁর অক্লান্ত চেষ্টায় সেই সময় গড়ে ওঠে ‘সাম্য আশ্রম’।

এই সংগঠন গড়তে গিয়েই সূর্য সেন সহকর্মী ও অনুগামী হিসেবে পেলেন গিরিজাশংকর চৌধুরী, চারুবিকাশ দত্ত, অম্বিকা চক্রবর্তী, নির্মল সেন, অনন্ত সিংহ, রাজেন দাস, যতীন রক্ষিত, সুখেন্দু দত্ত, রাখাল দে, প্রমুখ দেশপ্রেমে ভরপুর একদল তরুণকে। গিরিজাশংকর ও চারুবিকাশ দত্ত এসেছিলেন ৬ প্ত বিপ্লবী সংগঠন অনুশীলন সমিতি থেকে। অপর এক বিখ্যাত বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর দলের সদস্য ছিলেন সূর্য সেন নিজে।

অনন্ত সিং পরে নিয়ে এসেছিলেন গণেশ ঘোষকে। অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দল প্রভৃতি বিপ্লবী সংগঠনগুলির আদর্শে সূর্য সেন চট্টগ্রামেও একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংস্থা গড়ে তোলেন। ১৯২১ খ্রিঃ দেশ জুড়ে অসহযোগ আন্দোলন আরম্ভ হলে স্কুল – কলেজে ধর্মঘট, চট্টগ্রাম বার্মা অয়েল কোম্পানির ধর্মঘট, স্টিমার কোম্পানির ধর্মঘট ও আসাম – বেঙ্গল রেলওয়ে ধর্মঘট প্রভৃতিতে গণেশ ঘোষ ও অনন্ত সিং সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন।

১৯২২ খ্রিঃ গণেশ ঘোষ কলকাতায় এসে বেঙ্গল টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউশনে ভর্তি হন। এই প্রতিষ্ঠানেরই বর্তমান নাম যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। এখানে পড়ার সময়েই ১৯২৩ খ্রিঃ বোমা তৈরির মামলায় সন্দেহক্রমে গণেশ ঘোষ গ্রেপ্তার হন। পরে প্রমাণ অভাবে মুক্তি পান। ১৯২৪ খ্রিঃ ভারত রক্ষা আইনে দেশজুড়ে বিপ্লবীদের ধরপাকড় শুরু হলে গণেশ ঘোষকেও আটক করা হয়। চার বছর তাঁকে কারারুদ্ধ থাকতে হয়।

গণেশ ঘোষ এর কর্ম জীবন: Ganesh Ghosh’s Work Life

কারাবাসের পরে চট্টগ্রামে ফিরে গিয়ে পুনরায় সূর্যসেনের সঙ্গে বিপ্লবের কাজে। দেন। ১৯২৮ খ্রিঃ কলকাতার কংগ্রেস অধিবেশনে সূর্যসেনের নেতৃত্বে আরও কয়েকজনের সঙ্গে গণেশ ঘোষও প্রতিনিধি হিসাবে যোগ দেন। ১৯২৯ খ্রিঃ চট্টগ্রাম জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক নির্বাচিত হন মাষ্টারদা। সেই সময় তিনি তাঁর অনুগামীদের নিয়ে যে বিপ্লবী পরিষদ গঠন করেন তার সদস্য ছিলেন অম্বিকা চক্রবর্তী, নির্মল সেন, অনন্ত সিং ও গণেশ ঘোষ !

এই পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুসারেই মাষ্টারদার দলের নাম রাখা হয়, ইণ্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চট্টগ্রাম শাখা। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুঠ করার পরিকল্পনা মাষ্টারদা দীর্ঘদিন থেকে মনে লালন করছিলেন। তারই প্রস্তুতি হিসেবে তিনি অনুগামী তরুণদের নিয়ে গড়ে তোলেন একটি সুদক্ষ, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যোদ্ধাবাহিনী যাদের নিয়ে চট্টগ্রাম রিপাবলিকান আর্মি। এই সংগঠনের আদর্শ সম্পর্কে বলতে গিয়ে গণেশ ঘোষ বলেছেন, ” সূর্য সেন বুঝতে পেরেছিলেন কেবলমাত্র সামরিক পেশিবলের ওপর যে শাসন প্রতিষ্ঠিত, বল প্রয়োগ ছাড়া সেই ব্রিটিশ শাসনকে ভারতের মাটি থেকে উৎপাটিত করা যাবে না। ভারতের স্বাধীনতা হিংসার পথে আসবে না অহিংস উপায়ে আসবে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বলে তিনি মনে করতেন না।”

আরও পড়ুন: জোহানেস কেপলার জীবনী

আরও পড়ুন: উইলিয়াম হার্ভে জীবনী

আরও পড়ুন: র‍্যনে দেকার্ত জীবনী

আরও পড়ুন: জোহানেস গুটেনবার্গ জীবনী

আরও পড়ুন: ইভানজেলিস্তা টরিসেলি জীবনী

চট্টগ্রামে একটা কাপড়ের দোকান খুলেছিলেন গণেশ ঘোষ। এটা ছিল তার গোপন বিপ্লবী জীবনের আড়াল মাত্র। শক্তিশালী বিদেশী সরকারকে আঘাত হানার জন্য ইতিমধ্যে মাষ্টারদার নির্দেশে বিপ্লবীরা স্বদেশী ডাকাতির মাধ্যমে বেশকিছু অস্ত্রশস্ত্র ও অর্থ সংগ্রহ করেছেন। এইভাবে যখন আয়োজন প্রায় সম্পূর্ণ সেই সময় মাস্টারদা সকলকে জানিয়ে দিলেন তাদের কর্মসূচির কথা, গণেশ ঘোষের কথায় যা “মৃত্যুর কর্মসূচী।” মাস্টারদা দিনও ঠিক করে ছিলেন ১৯৩০ খ্রিঃ ১৮ ই এপ্রিল।

চট্টগ্রাম অভ্যুত্থানের পর্যালোচনা করে গণেশ ঘোষ পরবর্তীকালে সূর্য সেনের পরিকল্পনা ও কর্মসূচিকে লেনিনের কৌশলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেছেন, “মাস্টারদার নেতৃত্বে আমরা বৈপ্লবিক তাগিদে যে রকম সামরিক প্রোগাম রেখেছিলাম তার ইঙ্গিত Lenin 1905 খ্রিঃ দিয়ে গেছেন।” মাস্টারদার অধিনায়কত্বে চট্টগ্রামে বিপ্লবীদের যে স্বেচ্ছাবাহিনী গঠিত হয়েছিল গণেশ শোষ ছিলেন তার জি . ও . সি . মাস্টারদার পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্দিষ্ট দিনে ও নির্ধারিত সময়ে চট্টগ্রাম রিপাবলিকান আর্মির নির্ভীক সেনাবাহিনী অস্ত্রাগারের উদ্দেশ্যে অভিযান করল।

এই সম্পর্কে মাস্টারদার বিশ্বস্ত অনুগামী বিনোদবিহারী দত্ত লিখেছেন— “ ১৯৩০, ১৮ ই এপ্রিল। চট্টগ্রামে পুলিশ লাইন, রেলওয়ে ম্যাগাজিন হাউস, টেলিগ্রাফ – টেলিফোন অফিস একই সাথে আক্রমণ করে দখল করা হলো। এদিকে কলকাতা ও চট্টগ্রামে রেল চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সারা চট্টগ্রাম বিপ্লবীদের করতলগত। সকলেই নিজ নিজ দায়িত্ব কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করে পুলিশ লাইনে সমবেত হলেন। পুলিশ লাইনে অস্ত্রাগারের শিখরে ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হল।

অস্ত্রাগার পরিবেষ্টন করে বিপ্লবী রক্ষীরা রাইফেল হস্তে দাঁড়ালেন। মাস্টারদার প্রধান সহকর্মীরা সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে মাস্টারদাকে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আমির সর্বাধিনায়কের শ্রেষ্ঠ সম্মান প্রদর্শন করলেন। মাস্টারদা প্রশান্ত চিত্তে এই সম্মান ও অভিনন্দন গ্রহণ করেছিলেন সত্য। কিন্তু আনন্দে উৎফুল্ল হতে দেখা যায় নি। তাঁর স্বাভাবিক শান্ত এবং দায়িত্বপূর্ণ প্রদীপ্তি এখনও ছবির মতো চোখে ভেসে ওঠে। তিনি দাঁড়িয়ে ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চিটাগাং ব্রাঞ্চের ঘোষণাপত্র গম্ভীর কন্ঠে পাঠ করলেন।

সেদিনই তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের অবসানে ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার বাণী দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যে ওয়াটার ওয়ার্কসের ওপর থেকে শত্রুপক্ষের লুইস গানের গুলি বর্ষণ আরম্ভ হল। মাস্টারদার প্রধান লেফটেনান্ট অনন্ত সিং, গণেশ ঘোষ ও লোকনাথ বল সবাইকে ব্যূহ রচনা করে গুলির উপযুক্ত প্রত্যুত্তর দিতে উৎসাহ দিলেন এবং মাস্টারদার অপর দুজন পরামর্শদাতা ও বন্ধু নির্মল সেন ও অম্বিকা চক্রবর্তী অবস্থার মোকাবিলা করতে মাস্টারদার সাথে পরামর্শে নিযুক্ত হলেন। আরম্ভ হল বিজয়ী বিপ্লবীদের সাথে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রত্যক্ষ সংগ্রাম। সে কী ভীষণ গুলিবৃষ্টি।

বিপ্লবীরা মাটিতে শায়িত অবস্থায় সেই লুইস গানের গুলির মোকাবেলা করে দক্ষ যোদ্ধার পরিচয় দিলেন।। ঘন্টা দেড়েক অবিরাম সংগ্রামের পর হঠাৎ নিস্তব্ধ হল শত্রুশিবির। “বন্দেমাতরম” ধ্বনিতে মুখরিত হল পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার। কিন্তু বিপ্লবীদের নেতৃস্থানীয় সকলের মনেই প্রশ্ন। “শত্রু দুর্বল হলেও এখনও শক্তি আছে। কারণ জেলের অস্ত্রাগার, প্রাইভেট বন্দুকের দোকান, ট্রেজারি হাউস ও একটি অস্ত্রাগার তখনও অক্ষত অবস্থায় আছে। দিনের আলোতে স্বল্প সংখ্যক ছাত্র ও যুবক বিপ্লবীদের দেখলে শত্রুরা প্রবল আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে।… বিশেষ করে যখন তাদের হাতে তখনও কিছু কিছু অস্ত্রশস্ত্র আছে। পুলিশ লাইনের ঢালু জায়গাও বিপ্লবীদের পক্ষে নিরাপদ ছিল না। সম্মুখের দিকে শালগাছের আড়াল ছিল বলে তখনও কেউ আহত হননি।

কিন্তু বিপরীত দিক থেকে লুইসগান ফিট করা হলে সমূহ বিপদের সম্ভাবনা। এই দ্বন্দ্বমূলক চঞ্চলতার মধ্যেই অস্ত্রাগারে আগুন দিয়ে স্থানান্তরিত হবার প্রস্তাব অনুমোদিত হল। মাস্টারদা নীরব সম্মতি জানালেন। কারণ প্রধান বিপ্লবী সৈন্যাধ্যক্ষদের ওপরে তাঁর পূর্ণ আস্থা ছিল। আক্রমণ ও প্রতি আক্রমণের কৌশলেও তিনি তাদের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল ছিলেন। প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র ও গুলি বারুদ তুলে নিয়ে অবশিষ্ট অস্ত্রাগারে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল। এই সময়ে এক দুর্ঘটনা ঘটল। হিমাংশু দেশলাই ব্যবহার করে বসল। তাতেই তার সারা শরীর পেট্রোলের আগুনে ধরে উঠল।

সে চিৎকার করে ছুটোছুটি আরম্ভ করল। মনে হচ্ছিল, যেন একটা বৃহৎ আগুনের বৃত্ত বিদ্যুৎগতিতে ছুটে চলেছে। সারা শরীর আগুনে ঝলসে যাওয়ায় হিমাংশু যন্ত্রণায় করুণ আর্তনাদ আরম্ভ করলে অনন্ত সিং তাঁকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠিয়ে নিলেন। গণেশ ঘোষও সেই গাড়িতে উঠলেন। যারা গেলেন কয়েক ঘণ্টার মধ্যেও কেউ আর ফিরলেন না দেখে মাস্টারদা, নির্মলদা, অম্বিকাদা মিলে পরামর্শ ক্রমে সিদ্ধান্ত হল — পরবর্তী কর্মপন্থায় অগ্রসর হবার আগে অনন্তলাল ও গণেশের ফিরে আসার জন্য অপেক্ষা করা প্রয়োজন। অথচ এদিকে শত্রুপক্ষেরও তাদের সংগৃহীত অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আক্রমণের সম্ভাবনাও রয়েছে।

আরও পড়ুন: জন ডাল্টন জীবনী

আরও পড়ুন: কার্ল ফ্রিড‌রিশ গাউস জীবনী

আরও পড়ুন: আমেদেও অ্যাভোগাড্রো জীবনী

আরও পড়ুন: হামফ্রে ডেভি জীবনী

আরও পড়ুন: কাউন্ট রামফোর্ড জীবনী

এখনও দূরের পাহাড় থেকে মাঝে মাঝে লুইস গানের গুলি আসছে। অস্ত্রাগারের এই খোলা জায়গায় আর বেশি সময় অপেক্ষা করা সুবিবেচনার কাজ হবে না। এই অবস্থায় আজকের মত নিকটবর্তী কোন পাহাড়ে আত্মগোপন করে কাল পরবর্তী কর্মপন্থায় স্থিরভাবে এগিয়ে যাওয়াই আমাদের পক্ষে বাঞ্ছনীয়। এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে মাস্টারদা পাহাড়ি পথের বিশেষ অভিজ্ঞ অম্বিকাদাকে পাহাড় পথেই এগিয়ে গিয়ে আত্মগোপনের নির্দেশ দিলেন।….. ” তিনি আরও বলেছেন, “পুলিশ অস্ত্রাগার দখল করার সম্পূর্ণ দায়িত্ব ছিল অনন্ত সিং ও গণেশ ঘোষের ওপর। সুতরাং সেই ১৮ ই এপ্রিলের বিজয় গৌরব এই নেতৃদ্বয়েরই প্রাপ্য। আমি নিজের চোখে তাদের নির্ভীকতা ও আক্রমণাত্মক কৌশল দেখবার সৌভাগ্যলাভ করেছিলাম।… বিপ্লবাত্মক প্রস্তুতির জন্য এই নেতৃদ্বয়ের শ্রম ও সাধনা ছিল অপরিসীম।”

ঘটনাচক্রে গনেশ ঘোষ ও অনন্ত সিং সহ কয়েকজন বিপ্লবী প্রধান বাহিনী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লেন। বাধ্য হয়ে তাঁরা ২২ শে এপ্রিল ট্রেন ধরে কলকাতার পথে রওনা হয়ে পড়েন। কিন্তু পথ বিপদমুক্ত ছিল না। ফেনী স্টেশনেই সন্দেহক্রমে পুলিস তাঁদের চ্যালেঞ্জ জানাল। প্রায় বন্দি হতে হতে রিভলভারের সাহায্য নিয়ে তাঁরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেন। কলকাতায় পৌঁছে যুগান্তর দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ হল। ফরাসী শাসিত চন্দননগরে তাঁদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা হল। পুলিস এখানেও রেহাই দিল না।

গণেশ ঘোষ এর মৃত্যু: Ganesh Ghosh’s Death

১৯৩০ খ্রিঃ ১ লা সেপ্টেম্বর পুলিসের সঙ্গে সংঘর্ষে সহবিপ্লবী মাখন ঘোষাল নিহত হলেন। গণেশ অন্যান্য সঙ্গীদের সঙ্গে বন্দি হলেন ! ১৯৩২ খ্রিঃ চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার আক্রমণ মামলায় দন্ডিত বন্দিদের সঙ্গে গণেশকেও আন্দামানে সেলুলার জেলে নির্বাসন দেওয়া হল। ১৯৪৬ খ্রিঃ গণেশ মুক্তিলাভ করেন। ফিরে এসে তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টিতে যোগ দেন। স্বাধীন ভারতে গণেশ ঘোষ ১৯৪৮ খ্রিঃ থেকে ১৯৫২ খ্রিঃ পর্যন্ত কারারুদ্ধ ছিলেন।

কারামুক্তির পর মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী হয়ে বেলগাছিয়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পরপর তিনবার —১৯৫২ খ্রি, ১৯৫৭ খ্রিঃ ও ১৯৬২ খ্রিঃ নির্বাচিত হন। ১৯৬৭ খ্রিঃ দক্ষিণ কলকাতা কেন্দ্র থেকে লোকসভায় নির্বাচিত হন। মাষ্টারদার সুযোগ্য সহকর্মী গণেশ ঘোষ তাঁর শেষ জীবন জনসেবার কাজেই ব্যয় করেন। ১৯৯২ খ্রিঃ ২২ শে ডিসেম্বর কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন: জর্জেস কুভিয়ার জীবনী

আরও পড়ুন: রোবের্ট কখ জীবনী

আরও পড়ুন: উইলিয়াম রামসে জীবনী

আরও পড়ুন: স্যার জোসেফ জন থমসন জীবনী

আরও পড়ুন: রোনাল্ড রস জীবনী

Leave a Reply