ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

মাতঙ্গিনী হাজরা জীবনী – Matangini Hazra Biography in Bengali

Matangini Hazra Biography in Bengali
Matangini Hazra Biography in Bengali

মাতঙ্গিনী হাজরা জীবনী: Bengaliportal.com আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Bhagat Singh Biography in Bengali. আপনারা যারা মাতঙ্গিনী হাজরা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী মাতঙ্গিনী হাজরা র জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

মাতঙ্গিনী হাজরা কে ছিলেন? Who is Bhagat Singh?

মাতঙ্গিনী হাজরা (১৭ নভেম্বর ১৮৭০–২৯ সেপ্টেম্বর ১৯৪২) ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী এক মহান বিপ্লবী নেত্রী। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ২৯ সেপ্টেম্বর তদনীন্তন মেদিনীপুর জেলার তমলুক থানার সামনে ব্রিটিশ ভারতীয় পুলিশের গুলিতে তিনি শহিদ হয়েছিলেন। তিনি ‘গান্ধীবুড়ি’ নামে পরিচিত ছিলেন।

মাতঙ্গিনী হাজরা জীবনী – Matangini Hazra Biography in Bengali

নামমাতঙ্গিনী হাজরা
জন্ম19 অক্টোবর 1870
পিতা
মাতা
জন্মস্থানতমলুক, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাভারতীয় বিপ্লবী, স্বাধীনতা আন্দোলনের শহিদ
মৃত্যু29 সেপ্টেম্বর 1942 (বয়স 72)

bengaliportal

 

মাতঙ্গিনী হাজরা র জন্ম: Bhagat Singh’s Birthday

মাতঙ্গিনী হাজরা 19 অক্টোবর 1870 জন্মগ্রহণ করেন।

মাতঙ্গিনী হাজরা র পিতামাতা ও জন্মস্থান: Bhagat Singh’s Parents And Birth Place

স্বদেশীযুগের অন্যতম বীরাঙ্গনা মাতঙ্গিনী হাজরার জন্ম মেদিনীপুর জেলার হোগলা গ্রামে ১৮৭০ খ্রিঃ ১৭ ই নভেম্বর। তাঁর পিতার নাম ঠাকুরদাস মাইতি। বাল্য বয়সেই বিবাহ হয় ত্রিলোচন হাজরার সঙ্গে।

আরও পড়ুন: আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় জীবনী

আরও পড়ুন: জগদীশচন্দ্র বসু জীবনী

আরও পড়ুন: চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন জীবনী

আরও পড়ুন: চার্লস ডিকেন্স জীবনী

আরও পড়ুন: স্যার আর্থার কোনান ডায়াল জীবনী

মাতঙ্গিনী হাজরা র প্রথম জীবন: Bhagat Singh’s Early Life

নিঃসন্তান অবস্থায় বিধবা হন মাত্র ১৮ বছর বয়সে। এরপর থেকেই তিনি নিজেকে বিলিয়ে দেন সমাজ সেবার কাজে। পাড়াপ্রতিবেশীর সমস্ত রকম বিপদ আপদে মাতঙ্গিনী ছিলেন পরম সহায়। নিজে অতি সাধারণভাবে জীবন নির্বাহ করতেন। কিন্তু মানুষের রোগশোকে আশপাশের গ্রামে গিয়ে পর্যন্ত সেবার কাজ করতেন। এই সকল কারণে লোকে তাঁকে গান্ধীবুড়ি বলে ডাকত।

মাতঙ্গিনী হাজরা র কর্ম জীবন: Bhagat Singh’s Work Life

১৯২৯ খ্রিঃ ৩১ শে ডিসেম্বর কংগ্রেসের লাহোর অধিবেশনে স্বাধীনতার প্রতীক হিসাবে ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরের বছর জাতির কাছে পূর্ণ স্বাধীনতার আদর্শ জনপ্রিয় করে তোলার জন্য জাতীয় কংগ্রেসের কার্যনির্বাহক সমিতির বৈঠকে প্রতিবছর ২৬ শে জানুয়ারী স্বাধীনতা দিবস রূপে উদ্যাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৩০ খ্রিঃ ২৬ শে জানুয়ারী দিনটিকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস রূপে ঘোষণা করা হয়।

সেই সময় থেকে দেশের সকল প্রান্তে এই দিনটি যথোপযুক্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে প্রতিপালিত হতে থাকে। ১৯৩২ খ্রিঃ ২৬ শে জানুয়ারী মেদিনীপুরে কংগ্রেস কর্মীরা জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর এক শোভাযাত্রা বার করে। মাতঙ্গিনী এই শোভাযাত্রায় যোগ দিয়ে প্রকাশ্যভাবে রাজনীতিতে যোগ দেন। সেই বছরই আলিনান লবণ কেন্দ্রে লবণ প্রস্তুত করে তিনি আইন অমান্য করে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। পুলিশ মাতঙ্গিনীকে কারারুদ্ধ না করে পায়ে হাঁটিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে পরে ছেড়ে দেয়।

এরপর জেলায় চৌকিদারী ট্যাক্স বন্ধ আন্দোলন শুরু হলে মাতঙ্গিনী তার সঙ্গে যুক্ত হন। গভর্নর ফিরে যাও ধ্বনি দিয়ে তিনি শোভাযাত্রা বার করলে গ্রেপ্তার হন। পরে ছয় মাস সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হয়ে বহরমপুর জেলে বন্দী থাকেন। ১৯৩৯ খ্রিঃ মেদিনীপুর জেলা কংগ্রেস মহিলা সম্মেলনে মাতঙ্গিনী প্রতিনিধি রূপে যোগদান করেন। এইভাবেই গ্রামের এক সাধারণ গৃহবধূ নির্ভীক স্বাধীনতা সংগ্রামী হয়ে ওঠেন। এই সময়ে সারা ভারতে স্বাধীনতার দাবী জোরদার হয়ে ওঠে।

কংগ্রেসের আন্দোলনের পাশাপাশি বিপ্লবী সংগঠনগুলোও দেশের নানা প্রান্তে সক্রিয় হয়ে ওঠে ভারতের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী চার্চিল স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রীপসকে ১৯৪২ খ্রিঃ ১১ ই মার্চ ভারতে পাঠান। দিল্লিতে পৌঁছে ক্ৰীপস ভারতীয় নেতাদের সঙ্গে দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। এই সময় তিনি যেসব প্রস্তাব দেন তার মধ্যে ভারতকে স্বাধীনতা দেবার কোন প্রস্তাব ছিল না। এছাড়াও, ভারতের প্রতিরক্ষার পূর্ণ দায়িত্ব ভারতীয়দের হাতে ছেড়ে দেওয়ার কোন ইচ্ছাও ব্রিটিশ সরকারের ছিল না।

এই সকল কারণে কংগ্রেস ক্রীপসের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ফলে ক্রীপসের মিশন ব্যর্থ হয়। সঙ্গতভাবেই এরপর কংগ্রেস ও ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে সহযোগিতা ও বোঝাপড়ার সব প্রচেষ্টাই শেষ হয়ে যায়। পরিণতিতে কংগ্রেস তথা গান্ধীজিব মনে ব্রিটিশ বিরোধী মনোভাব ঘনীভূত হয়ে ওঠে। এই সময়ে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিও খুব ঘোরালো হয়ে ওঠে। পৃথিবী জুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আবহ — জাপান দুর্বার গতিতে দক্ষিণ – পূর্ব এশিয়ার দিকে অগ্রসর হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই মালয়, সিঙ্গাপুর ও ব্রহ্মদেশ দখল করে নেয়। ভারতবর্ষও যুদ্ধের আওতার বাইরে ছিল না।

আরও পড়ুন: লিওনার্দো দা ভিঞ্চি জীবনী

আরও পড়ুন: নিকোলাস কোপার্নিকাস জীবনী

আরও পড়ুন: আন্দ্রে ভেসালিয়াস জীবনী

আরও পড়ুন: টাইকো ব্রাহে জীবনী

আরও পড়ুন: গ্যালিলিও গ্যালিলেই জীবনী

মাদ্রাজ ও কলকাতায় জাপানের বিক্ষিপ্ত আক্রমণ জনগণের মনে ত্রাস সঞ্চার করে। জাপানী আক্রমণের মোকাবেলার জন্য এই সময় ওহরলাল নেহরু ও মৌলানা আজাদ ভারতবাসীর প্রতি সর্বশক্তি নিয়োগের আহ্বান জানান। গান্ধীজি, সর্দার প্যাটেল, রাজেন্দ্রপ্রসাদ প্রমুখ কংগ্রেসী নেতৃবৃন্দও ব্রিটিশ শক্তিকে উৎখাত করে জাপানী আক্রমণ প্রতিরোধ করার স্বপক্ষে মত প্রকাশ করেন। এই সময় গান্ধীজি ব্রিটিশ সরকারকে ভারত ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে হরিজন পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। গান্ধীজির এই প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের অন্যান্য নেতারাও মেনে নেন।

এই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৪২ খ্রিঃ ৮ ই আগস্ট কংগ্রেস কার্যনির্বাহক সমিতি ঐতিহাসিক ভারত ছাড় বা Quit India প্রস্তাব অনুমোদন করে। প্রস্তাবে বলা হয়, ভারতের কল্যাণের জন্য, বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য, পৃথিবী থেকে নাৎসীবাদ, ফ্যাসিবাদ ও সমরবাদের অবসানের জন্য ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটাতে হবে। ব্রিটিশ ভারত ছেড়ে চলে গেলেই ভারতীয় প্রতিনিধিরা একটি সাময়িক সরকার গঠন করবেন ও সকলের গ্রহণযোগ্য একটি সংবিধান রচনা করবেন। গান্ধীজির এই প্রস্তাব গৃহীত হবার পর দেশ জুড়ে সূত্রপাত হয় ভারতছাড় আন্দোলন ৷ এই আন্দোলন চলে দুই বছর –১৯৪২ খ্রিঃ ৯ আগস্ট থেকে ১৯৪৪ খ্রিঃ ৫ ই মে পর্যন্ত।

অল্প সময়ের মধ্যেই গান্ধীজির আহূত ভারত ছাড় আন্দোলন শহর থেকে গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন প্রদেশে স্বতঃস্ফুর্ত গণ – বিক্ষোভ দেখা দেয়। এই আন্দোলনের ব্যাপকতা ও প্রকৃতি মারাত্মক হয়ে ওঠে বিহারে। সেখানে বহু সরকারী কর্মচারী নিহত হয়। সরকারী সম্পত্তিও ধ্বংস হয়। থানাগুলি জনগণ দখল করে নেয়। কোন কোন অঞ্চলে গণবিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। রেলের লাইন উপড়ে ফেলা হয়। টেলিগ্রাফের তার কেটে দেওয়া হয় ৷ ডাকঘর পুড়িয়ে সরকারের যোগাযোগ ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়। বোম্বাই, নাগপুর, কলকাতা, পাটনা প্রভৃতি শহরে স্বেচ্ছাসেবীরা সরকারী কার্যালয় ও আদালতে ব্রিটিশ জাতীয় পতাকা সরিয়ে ফেলে ভারতের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেন।

পুলিশ গুলি চালালে অনেক স্বেচ্ছাসেবী প্রাণ হারান ৷ ফলে ক্রমেই গণ বিক্ষোভ কংগ্রেসের অহিংস আদর্শ লঙ্ঘন করে হিংসাত্মক হয়ে উঠতে থাকে। এই সময়ে বাংলার মেদিনীপুর জেলার আন্দোলন এক মারাত্মক গণ – বিদ্রোহের রূপ নেয়। তার ব্যাপকতা ও তীব্রতা বেশি হয়ে ওঠে তমলুক ও কাঁথি মহকুমায়। ১৯৪২ খ্রিঃ ২৯ শে সেপ্টেম্বর তমলুকে হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন দিক থেকে মিছিল করে এসে মিলিতভাবে থানা ও আদালত দখল করার জন্য অগ্রসর হতে থাকে। লক্ষকন্ঠে ধ্বনি উঠছে — ইংরাজ ভারত ছাড়। ইংরাজ ভারত ছাড়— সুসজ্জিত ইংরাজ সেনাবাহিনীও প্রস্তুত হয়ে অপেক্ষা করছিল আদালত চত্বরের বাইরে।

আরও পড়ুন: আলফ্রেদ নোবেল জীবনী

আরও পড়ুন: জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল জীবনী

আরও পড়ুন: উইলিয়াম থমসন ব্যারন কেলভিন জীবনী

আরও পড়ুন: বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন জীবনী

আরও পড়ুন: আরমাউয়ার হ্যানসেন জীবনী

মাতঙ্গিনী হাজরা র মৃত্যু: Bhagat Singh’s Death

উদ্দীপ্ত শোভাযাত্রা ক্রমেই এগিয়ে আসতে থাকে। আতঙ্কিত সৈন্যবাহিনী মিছিল ছত্রভঙ্গ করবার জন্য গুলি চালাল। আহত স্বেচ্ছাসেবকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়লে এগিয়ে আসেন তিয়াত্তর বছরের বৃদ্ধা মাতঙ্গিনী ৷ পতাকা তুলে ধরে নেতৃত্ব দিয়ে মিছিলকে এগিয়ে নিয়ে চলেন। বুকে তার অদম্য শক্তি, মুখে বন্দেমাতরম মন্ত্র আর ডান হাতে উত্তোলিত জাতীয় পতাকা। সেনাবাহিনী এবারে গুলি চালাল মাতঙ্গিনীর পতাকা ধরা হাতে। কিন্তু তিনি পতাকা মাটিতে পড়তে দিলেন না। রক্তাক্ত অবস্থায় অন্য হাতে তুলে নিলেন। কিন্তু কয়েক পা অগ্রসর হতে না হতে পতাকাধরা বাঁ হাতেও গুলি বিধল। কিন্তু তবু পতাকা পড়ল না।

রক্তাক্ত দুহাতে পতাকার দন্ড বুকের সঙ্গে জাপ্টে ধরে এগিয়ে চললেন তিনি। পেছনে জনতা এবারে ছত্রভঙ্গ হল না। সুশৃঙ্খলভাবে অনুসরণ করে চলল তাদের নেত্রীকে। তার আদর্শে তারা উদ্বেল, উদ্বুদ্ধ। কিন্তু এই মহান দেশপ্রেম, এমন দীপ্ত প্রেরণা সহ্য করতে পারল না ইংরাজ সরকার। এবারে তারা গুলি চালাল মাতঙ্গিনীর বুক লক্ষ্য করে। দুহাতে জাতীয় পতাকা জড়িয়ে ধরে বন্দে মাতরম ধ্বনি দিতে দিতে লুটিয়ে পড়ল মাতঙ্গিনীর প্রাণহীন দেহ। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে নির্যাতিত হয়েছেন অসংখ্য সংগ্রামী, অকাতরে প্রাণ উৎসর্গ করেছেন জানা অজানা কত শত বিপ্লবীকর্মী। এঁদের সকলের নাম বা পরিচয় আমরা ক’জন জানি।

এই বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অতুলনীয় কীর্তি ইতিহাস সগর্বে তার বুকে ধারণ করে আছে। আমাদের কাছে সব শহীদই এক ও অভিন্ন। সেখানে মাতঙ্গিনী হাজরা বা সূর্য সেন কি বাঘা যতীন বা অরবিন্দ কার অবদান বেশি সে কথা ভারতবাসী কখনো ভাবে না। তাই তাঁদের স্মৃতিতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে সকল শহীদের অবদান। তাঁদের নির্বিচার আত্মত্যাগের ফলেই যে আজ আমরা ভারতবাসীরা ভোগ করছি স্বাধীনতা।

Leave a Reply