ADS বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন: [email protected]

পাভো নুরমি জীবনী – Paavo Nurmi Biography in Bengali

Paavo Nurmi Biography in Bengali
Paavo Nurmi Biography in Bengali
Rate this post

পাভো নুরমি জীবনী: Bengaliportal.com আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে Paavo Nurmi Biography in Bengali. আপনারা যারা পাভো নুরমি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী পাভো নুরমি র জীবনী টি পড়ুন ও জ্ঞানভাণ্ডার বৃদ্ধি করুন।

পাভো নুরমি কে ছিলেন? Who is Paavo Nurmi?

পাভো জোহাননেস নুরমি (১৩ জুন ১৮৯৭ – ২ অক্টোবর ১৯৭৩) ছিলেন একজন ফিনিশীয় মাঝারি ও লম্বা দূরত্বের দৌড়বিদ। তার ডাক নাম ছিল “উড়ন্ত ফিন” কারণ তিনি ২০ শতকের গোড়ার দিকে দূরবর্তী দৌড়ের খেলায় আধিপত্য করেছেন। নুরমি ১৫০০ মিটার থেকে ২০ কি.মি দূরত্বের দৌড়ের খেলায় ২২টি আনুষ্ঠানিক বিশ্ব রেকর্ড করেন, এবং অলিম্পিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ১২টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে নয়টি স্বর্ণপদক ও তিনটি রৌপ্য পদক লাভ করেন। ক্যারিয়ারের শিখরে থাকাকালীন, নুরমি ৮০০ মিটার ও তদোর্ধ্ব দৌড়ের ১২১টি প্রতিযোগিতায় ছিলেন অপরাজিত। তার ১৪ বছরের ক্যারিয়ার জুড়ে, তিনি ১০০০ মিটারের মেঠো পথ অতিক্রম করার ইভেন্টগুলোতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন।

পাভো নুরমি জীবনী – Paavo Nurmi Biography in Bengali

নামপাভো নুরমি
জন্ম13 জুন 1897
পিতাজোহান ফ্রেডরিক নুরমি
মাতামাতিলদা উইলহেলমিনা লাইন
জন্মস্থানতুর্কু, ফিনল্যান্ডের গ্র্যান্ড ডাচি, রাশিয়ান সাম্রাজ্য
জাতীয়তাফিনিশ
পেশাদৌড়বিদ
মৃত্যু2 অক্টোবর 1973 (বয়স 76)

bengaliportal

 

পাভো নুরমি র জন্ম: Paavo Nurmi’s Birthday

পাভো নুরমি 13 জুন 1897 জন্মগ্রহণ করেন।

পাভো নুরমি র কর্ম জীবন: Paavo Nurmi’s Work Life

বর্তমান বিশ্বের খেলাধুলার শ্রেষ্ঠ আসর হল অলিম্পিক গেমস। অলিম্পিকের ইতিহাস উজ্জ্বল হয়ে আছে যেসব বিস্ময়কর প্রতিভার কর্মকৃতিত্বে তাঁদের মধ্যে দৌড়বীর পাভো নুরমী অন্যতম। পাভো নুরমীর সাফল্যের কাহিনী লিখিত আছে ১৯২০ খ্রিঃ অ্যান্টওয়ার্পে, ১৯২৪ খ্রিঃ প্যারিসে এবং ১৯২৮ খ্রিঃ আমস্টারডাম অলিম্পিকের ইতিহাসের পাতায়।

এই তিনটি অলিম্পিক আসরে দূরপাল্লার দৌড়ের ৬ টি বিভাগে প্রথম স্থান লাভ করেছিলেন নুরমী। ৩ টি বিভাগে লাভ করেছিলে দ্বিতীয় স্থান ৷ এই অবিশ্বাস্য কীর্তি অর্জন করা আজও পর্যন্ত অন্য কোন অ্যাথালিটের পক্ষে সম্ভব হয় নি। সর্বমোট ৯ টি বিভাগে সাফল্য লাভ করেছিলেন নুরমী। নুরমীর প্রতিষ্ঠিত রেকর্ড অবশ্য বর্তমানে আর একই অবস্থানে নেই কিন্তু এক সময়ে তিনি যে কীর্তি স্থাপন করেছেন তা আজও বিশ্বের সকল অ্যাথলিট শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

পাভো নুরমীর দীর্ঘ গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস পর্যালোচনা করলে রূপকাহিনীর মতই মনে হয়। নুরমী তার বিস্ময়কর প্রতিভার প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন ১৯২৪ খ্রিঃ প্যারিস অলিম্পিকে। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দৌড়বীরদের মাত্র একঘণ্টা সময়ের মধ্যে পেছনে ফেলে ১,৫০০ ও ৫,০০০ মিটার দূরত্বের দৌড়ে বিজয়ী হয়েছিলেন তিনি। এরপর দীর্ঘ ১১ বছর ধরে দূর পাল্লার দৌড়ে একের পর এক বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেছেন তিনি। নিজে যে রেকর্ড গড়েছেন, পরে সেই রেকর্ড নিজেই ভঙ্গ করেছেন।

আরও পড়ুন: জন মিলটন জীবনী

আরও পড়ুন: উইলিয়ম শেক্সপীয়র জীবনী

আরও পড়ুন: হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসন জীবনী

আরও পড়ুন: কাউন্ট লেভ নিকোলায়েভিচ টলষ্টয় জীবনী

আরও পড়ুন: মার্ক টোয়েন জীবনী

তাঁর অ্যাথলিট জীবনের ইতিহাস এমনি রেকর্ড ভাঙ্গাগড়ারই ইতিহাস। যেখানে যখন দূরপাল্লার দৌড় প্রতিযোগিতায় তিনি অংশগ্রহণ করেছেন, সেখানেই পেয়েছেন বিজয়ীর জয়মাল্য। গোটা জীবনে অসংখ্য দৌড় প্রতিযোগিতায় যোগদান করেছেন, জয়ের পর জয়লাভ করেছেন। আর প্রত্যেকটি দৌড়ের পরেই তিনি উৎসাহে বলে উঠেছেন, “পরের দৌড়ে আমি আরও ভাল করব।” এমনি প্রাণশক্তিতে ভরপুর ছিলেন তিনি।

নিজের চেষ্টা ও সাধনা বলে যে মানুষের পক্ষে দৌড়ের সময়কে দিনের পর দিন উন্নত করা সম্ভব, এই সত্য নুরমীর জীবনে বারবার প্রমাণ হয়েছে। নিজের দৌড়ের সময়কে ঊর্ধ্বমুখী করবার জন্য নুরমী প্রত্যেকটি দৌড়ে স্টপ ওয়াচ ব্যবহার করতেন। দৌড়তেন যন্ত্রচালিতের মত। ক্লান্তি বা অবসাদ বলে তাঁর দেহে কিছু ছিল না। ঘড়ির সময় দেখে তাই তিনি অবলীলায় বাড়িয়ে নিতে পারতেন তার ক্লান্তিহীন পা দুটির গতি।

নুরমীর অসাধারণ সাফল্যের চাবিকাঠি ছিল দৃঢ় মনোবল আর অফুরন্ত প্রাণশক্তি। এর সহায়তায়ই তিনি দীর্ঘদিন একের পর এক ইতিহাস সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ‘স্টপ ওয়াচ’ ব্যবহার করার জন্য অনেক সময় তাঁকে ব্যঙ্গ ও সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে, কিন্তু নুরমীর সাফল্যের পর সেই সমালোচনাকারীদেরই তাঁকে দেখার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে। নুরমীর ছিল এক অদ্ভুত খেয়াল। প্রত্যেক দৌড়েই তিনি নতুন নতুন জুতো ব্যবহার করতেন।

কেবল তাই নয়, ভিন্ন ভিন্ন দূরত্বের দৌড়ের জন্য তাঁর জুতোর রঙও হতো ভিন্ন রকমের। এই রঙীন জুতো পরা পা যখন দৌড়তে শুরু করত তখন তার দৌড়ের ভঙ্গিমা দর্শকদের মনেও মাতন তুলত। তাঁর দৌড়ের ভঙ্গি ছিল যথার্থই মনোরম। দৌড়ে ছিল ঝড়ের গতি, আবার নুরমী নিজে ছিলেন ফিনল্যান্ডের অধিবাসী। তাই অনেকেই তাঁর নাম দিয়েছিলেন ফ্লাইংফিন। পাভো নুরমীর জন্ম হয়েছিল ফিনল্যান্ডের অন্তর্গত হেলসিঙ্কির অদূরবর্তী ‘এবো’ নামক স্থানে। দৌড়ের প্রতিভা ছিল জন্মগত।

তাই বাল্যকাল থেকেই দৌড়ের প্রতি ছিল প্রবল আকর্ষণ। নয় বছর বয়স থেকেই তার দৌড়ের প্রতিভা প্রকাশ পেতে থাকে। একবার ট্রলি গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়ে বন্ধুদের স্তম্ভিত করে দিয়েছিলেন। সংসারের দায়িত্ব ছিল বাবার ওপর। নুরমীর যখন ১২ বছর বয়স সেই সময় তার বাবা মারা যান। ফলে বাবার বড় ছেলে হিসেবে সংসারের সব দায়িত্ব এসে পড়ে তার ওপর। গ্রাসাচ্ছাদনের জন্য এই সময় তাঁকে উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে হয়।

কিন্তু অসীম মনোবল নিয়ে তিনি দারিদ্র্যের সঙ্গে সংগ্রাম করে গেছেন। কিন্তু এই অবস্থাতেও তিনি দৌড়ের নেশা ত্যাগ করতে পারেন নি। সারা দিনের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পরে বাড়ি ফিরে রাতের অন্ধকারে একাকী দৌড়ের অনুশীলন করতেন। সেই সময় মাঠ থাকত জনহীন। সঙ্গীহীন নুরমী মাঠ ছাড়িয়ে বনের ধার দিয়ে মাইলের পর মাইল দৌড়ে যেতেন। নিজের সম্বন্ধে সবসময়ই অত্যস্ত সচেতন থাকতেন নুরমী। দৈহিক ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য সর্বপ্রকার প্রলোভন ও নেশা থেকে দূরে থাকতেন। মাছ, মাংস, মদ বা সিগারেট কোন কিছুই তাঁকে প্রলুব্ধ করতে পারত না। সিনেমা দেখতেন ক্বচিৎ কখনো।

নিরবচ্ছিন্ন অনুশীলন আর কৃচ্ছ্রতার মধ্যদিয়ে কাটে দীর্ঘ ছয়টি বছর। এই সময়টা ছিল নিজেকে প্রস্তুত করার পর্ব। কেননা, এই ছয় বছরে তিনি কখনো কোন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেননি। নুরমীর স্বপ্ন ছিল দৌড়ে বিশ্ব জয় করা। এই দুর্লভ সম্মান অর্জন করতে হলে যে নিজের শরীরকে সুগঠিত ও শ্রমসহিষ্ণু করে গড়ে তুলতে হবে এ বিষয়ে তিনি ছিলেন পূর্ণ সজাগ। নুরমী ১৯১৯ খ্রি ফিনল্যান্ডের সৈন্যবিভাগে যোগদান করেন।

এই কর্মজীবনেও তিনি একদিনের জন্যও তাঁর দৌড় অনুশীলনে শৈথিল্য করেননি। দৌড়ের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে নুরমীর প্রিয় ছিল ৫,০০০ মিটার ও ১০,০০০ মিটার দৌড়। এই দূরত্বের দৌড়ে ক্রমে তাঁর কৃতিত্বের খ্যাতি দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিদেশেও ছড়িয়ে পড়ে। নুরমী প্রথম অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন ১৯২০ খ্রিঃ অ্যান্টওয়ার্প অলিম্পিকে।

এই আসরে ফিনল্যান্ডের হয়ে ৫,০০০ মিটার দৌড়ে শেষ পর্যন্ত নুরমী খ্যাতনামা দৌড়বীর গুইলমটের সঙ্গে পেরে উঠলেন না। দ্বিতীয় স্থান লাভ করলেন। কিন্তু ১০,০০০ মিটার দৌড়ে এই পরাজয়ের পাল্টা জবাব দিলেন। গুইলমটের বিরুদ্ধে দৌড়ে স্বর্ণপদক লাভ করলেন। এই ফলাফলের পরে নুরমীর সম্বন্ধে বিশ্বের দৌড়বীরদের মধ্যে আগ্রহ ও কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। ১৯২৪ খ্রিঃ প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় অলিম্পিক ক্রীড়া।

আরও পড়ুন: লর্ড জর্জ গর্ডন বায়রন জীবনী

আরও পড়ুন: অস্কার ওয়াইল্ড জীবনী

আরও পড়ুন: সত্যেন্দ্রনাথ বসু জীবনী

আরও পড়ুন: প্রশান্তচন্দ্র মহলানবীশ জীবনী

আরও পড়ুন: মেঘনাদ সাহা ‘র জীবনী

এই আসরে নুরমী দৌড়ের যে ইতিহাস সৃষ্টি করেন তা ছিল যেমন বিস্ময়কর তেমনি অবিশ্বাস্য। এই কৃতিত্বের বলেই তিনি বিশ্বের ক্রীড়া রসিক মানুষের মনে চিরস্থায়ী আসন লাভ করেন। প্যারিস অলিম্পিকে নুরমীর সাফল্য ছিল অলিম্পিকের ইতিহাসেও অভূতপূর্ব। মাত্র একঘণ্টা সময়ের মধ্যে ১,৫০০ মিটার দূরত্ব ৩ মিনিট ৫৩ সেকেন্ডে এবং ৫,০০০ মিটার দূরত্ব ১৪ মিঃ ৩১২ সেকেন্ডে দৌড়ে অতিক্রম করে নুরমী উভয় প্রতিযোগিতায় নতুন অলিম্পিক রেকর্ড স্থাপন করেন।

অলিম্পিকের ইতিহাসে নুরমীই ছিলেন প্রথম দৌড়বীর যিনি মাত্র একঘণ্টার মধ্যে ওই দুই দূরত্বের দৌড়ে বিজয়ী হয়েছেন। এরপরের বিজয় ছিল আরও চমকপ্রদ। বাকি ছিল ১০,০০০ মিটার দৌড় ও ৩,০০০ টিম রেস। ফ্লাইংফিন পাভো নুরমী অবলীলায় এই দুটি দৌড়ে প্রথম স্থান লাভ করলেন। ৩,০০০ মিটার দৌড়ের সময় ছিল ৮ মিঃ ৩২ সেকেন্ড। এটিও ছিল রেকর্ড।

প্যারিসে অনুষ্ঠিত সপ্তম অলিম্পিকে নুরমী চারটি স্বর্ণপদকও তিনটি অলিম্পিক রেকর্ডের অধিকারী হয়েছিলেন। ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই দৌড়ের পর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে নুরমীর কাছে দৌড়নোর আমন্ত্রণ আসতে থাকে। দৌড়বীরের দেশ হল আমেরিকা। নুরমী ১৯২৫ খ্রিঃ আমেরিকা আসেন। এখানে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দ্রুতগামী দৌড়বীরদের সঙ্গে নুরমীর দৌড়ের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সকলের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন নুরমী। তিনি কাউকে হতাশ করলেন না।

প্রথম দিনের প্রতিযোগিতাতেই নুরমী বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করে বিজয়ী হন। দ্বিতীয় দিনেও ভিন্ন দূরত্বের দৌড়ে অপরাজেয় থাকেন নুরমী। এই দৌড়ে নুরমীর সময় আবার একটি বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করল। তৃতীয় দিনেও ঘটল একই ঘটনা। তিনদিন তিনটি বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করে আমেরিকাবাসীদের হৃদয় জয় করে নেন নুরমী। কিন্তু এই তিন দিনের সাফল্য ছিল সূত্রপাত। এরপর কখনো শিকাগোতে কখনো নিউইয়র্কে, এমনি করে বিভিন্ন শহরে দৌড়ের পর দৌড়ে বিজয়ী হয়েছেন।

আমেরিকা সফরে এসে নুরমী ১৬ টি বিশ্বরেকর্ড ও ৩৮ টি বিভিন্ন ট্রাক রেকর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। এই সফরে এসেই তিনি দুই মাইল দূরত্বের দৌড় নয় মিনিটেরও কম সময়ে অতিক্রম করে দূরপাল্লার অদ্বিতীয় দৌড়বীর রূপে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯২৮ খ্রিঃ আমস্টারডাম অলিম্পিকে বলতে গেলে রাজকীয় মহিমা নিয়ে আবির্ভূত হলেন নুরমী। ততদিনে দূরপাল্লার দৌড়ানোর বয়সের প্রায় শেষ সীমায় এসে পৌঁচেছেন তিনি। কিন্তু পাভো নুরমী এখনো পাভো নুরমী।

অফুরন্ত প্রাণশক্তির আধার তিনি। নতুন অলিম্পিক রেকর্ড সৃষ্টি করলেন অবলীলায়। ১০,০০০ মিটার দৌড় মাত্র ৩০ মিনিট ১৮ সেকেন্ড সমাপ্ত করে রেকর্ড সৃষ্টি করলেন। ৫,০০০ মিটার দৌড়েও তার অত্যদ্ভুত ক্ষমতা প্রকাশিত হল। শুরু থেকেই সকলকে অতিক্রম করে এগিয়ে গেলেন। কিন্তু দৌড়ের শেষ সীমার কাছাকাছি এসে নুরমীর স্বাভাবিক গতি শ্লথ হতে থাকে। নুরমী ঘন ঘন পেছনে ফিরে তাকাবার চেষ্টা করতে থাকেন। দর্শকদের মধ্যেও উত্তেজনা ও সন্দেহ সোচ্চার হয়ে ওঠে।

শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় স্থানের অধিকারী রিটোলা নুরমীকে অতিক্রম করে সীমা রেখার ফিতা স্পর্শ করে প্রথম স্থান অধিকার করেন। দৌড় শেষ হবার পর অনুরাগী দর্শকদের নানান প্রশ্নের উত্তরে নুরমী বললেন, রিটোলা আমার বন্ধু ও স্বদেশবাসী — তার কাছে পরাজিত হওয়া আমার কাছে অগৌরবের মনে হয় না। এরপর ৩,০০০ মিটার স্টিপল চেজেও নুরমী দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। শেষ পর্যন্ত অলিম্পিকে নুরমী লাভ করলেন ৬ টি স্বর্ণ পদক ও ৩ টি রৌপ্যপদক।

আরও পড়ুন: জোহানেস কেপলার জীবনী

আরও পড়ুন: উইলিয়াম হার্ভে জীবনী

আরও পড়ুন: র‍্যনে দেকার্ত জীবনী

আরও পড়ুন: জোহানেস গুটেনবার্গ জীবনী

আরও পড়ুন: ইভানজেলিস্তা টরিসেলি জীবনী

দৌড়ে নব নব ইতিহাস সৃষ্টিকারী পাভো নুরমী তাঁর প্রতিভার গৌরবে ফিনল্যান্ডকে গৌরবান্বিত করেছেন। প্রতিভার স্বীকৃতি দিতে তার স্বদেশবাসী জনসাধারণ কার্পণ্য করেননি। জাতীয় বীরের মর্যাদায় ভূষিত হয়েছেন তিনি, তার নাম ফিনল্যান্ডের ঘরে ঘরে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়। নুরমী রাষ্ট্রের কাছ থেকে পেয়েছেন অর্ডার অব হোয়াইট রোজ পদবী এবং গোল্ড মেডেল অব মেরিট পদক। ফিনল্যান্ডের রাধানীর রাজপথের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নুরমীর ব্রোঞ্জমূর্তি স্থাপিত হয়েছে তাঁর জীবিতকালেই।

সেই মূর্তি অতিক্রম করে যাবার সময় দেশ – বিদেশের মানুষেরা মস্তক অবনত করে নুরমীর প্রতি শ্রদ্ধা ও প্রীতি নিবেদন করেন। অলিম্পিক কমিটিও নুরমীর প্রতিভাকে সম্মানিত করেছেন হেলসিঙ্কি অলিম্পিকে তাঁকে পুতাগ্নির দ্বারা অলিম্পিক দীপশিখা প্রজ্জ্বলিত করার দায়িত্ব দিয়ে। ১৯২১ খ্রিঃ থেকে ১৯৩১ খ্রিঃ পর্যন্ত ছিল নুরমীর জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।

এই সময়ে তিনি যে বিশ্বরেকর্ড গুলি সৃষ্টি করেছেন সেগুলি হলো—

১৯২১ খ্রিঃ

  • ৬ মাইল দৌড় — সময় ২৯ মিঃ ৪১.৪ সেঃ
  • ১০,০০০ মিটার দৌড় — সময় ৩০ মি : ৪০.২ সেঃ

১৯২২ খ্রিঃ

  • ৫,০০০ মিটার দৌড় — সময় ১৪ মিঃ ৩৫.৪ সেঃ
  • ২,০০০ মিটার দৌড়– সময় ৫ মিঃ ২৬.৩ সেঃ ৩,০০০ মিটার দৌড় — সময় ৮ মিঃ ২৮.৬ সেঃ

১৯২৩ খ্রিঃ

  • ১ মাইল দৌড় — সময় ৪ মিঃ ১০.৪ সেঃ
  • ৩ মাইল দৌড় — সময় ১৪ মিঃ ১১.২ সেঃ

১৯২৪ খ্রিঃ

  • ৪ মাইল দৌড় — সময় ১৯ মিঃ ১৫.৩ সেঃ
  • ৫ মাইল দৌড় — সময় ২৪ মিঃ ৬.২ সেঃ
  • ১,৫০০ মিটার দৌড় – সময় ৩ মিঃ ৫২.৬ সেঃ
  • ৫,০০০ মিটার দৌড় — সময় ১৪ মিঃ ২৮.২ সেঃ
  • ১০,০০০ মিটার দৌড় — সময় ৩০ মিঃ ৬.২ সেঃ

পাভো নুরমি র মৃত্যু: Paavo Nurmi’s Death

২ অক্টোবর ১৯৭৩ পাভো নুরমি এর জীবনাবসান হয়।

আরও পড়ুন: আলফ্রেদ নোবেল জীবনী

আরও পড়ুন: জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল জীবনী

আরও পড়ুন: উইলিয়াম থমসন ব্যারন কেলভিন জীবনী

আরও পড়ুন: বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন জীবনী

আরও পড়ুন: আরমাউয়ার হ্যানসেন জীবনী

Leave a Reply